মাদকবিরোধী অভিযানে ‘সতর্ক হওয়ার’ পরামর্শ
সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে’ এবং ‘সতর্কভাবে’ অভিযান পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছে একটি সংসদীয় কমিটি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২২তম বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি এমপি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটির সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান এমপি, মো. ফরিদুল হক খান এমপি, আবুল কালাম আজাদ এমপি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ফখরুল ইমাম এমপি, এবং কামরুন নাহার এমপি অংশ নেন।
বৈঠকে চলমান মাদক বিরোধী অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম। তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা দেখলাম পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী সরকার অভিযান চালাচ্ছে কিনা।
এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমরা পত্রিকায় কোনো তালিকা দেইনি। আইন-শৃঙ্খলা ৫টি বাহিনীর করা মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা যাদের নাম কমপক্ষে ৩টিতে আছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এ সময় কমিটি এই অভিযান পরিচালনার জন্য আরও সতর্কতা অবলম্বনের সুপারিশ করে।
এদিকে বৈঠকে জানানো হয়, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশিদের মধ্যে গত ৫ মাসে ৬৭ হাজার ৭৫১টি পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া হয়েছে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৭২৬ টাকা। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনে গিয়ে প্রবাসীরা প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করে পাসপোর্ট নবায়ন করছেন।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে গত মাসে ২ হাজার ২৮৬টি এনরোলমেন্ট, ৩ হাজার ৭৯টি পাসপোর্ট প্রাপ্তি এবং ২ হাজার ৭২২ পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। সেখানকার হাইকমিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইং এ কাজ করছে।
বৈঠকে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট ও ভিসা নবায়ন কাজ আরও গতিশীল ও সহজতর করা এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সম্প্রসারণে কার্যকর নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, মালয়েশিয়ায় পাসপোর্ট নবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে ২০ জন কম্পিউটার অপারেটর ও দুই জন কর্মকর্তা কাজ করছেন। তারা রোস্টার অনুযায়ী সেখানে দু'মাস থাকেন।
কমিটির সদস্য ফখরুল ইমাম সম্প্রতি তার মালয়েশিয়ার সফরের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, সেখানে নেপালিরা সিকিউরিটির কাজ করে। এই সেক্টর তাদের দখলে। কিন্তু মালয়েশিয়া চাচ্ছে মুসলমানরা অর্থাৎ বাংলাদেশিরা এ কাজ করুক। কিন্তু এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে তিনি জানান।
এছাড়া প্রবাসীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট পাচ্ছেন না বলে তিনি অভিযোগ করেন। কারণ বাংলাদেশে থেকে পাসপোর্ট যেতে দেরি হচ্ছে। কমিটি মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সমন্বয় বাড়িয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা নবায়নের সময়সীমা বাড়াতে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করে।
এছাড়া হাইকমিশনে পাসপোর্ট ও ভিসা নবায়নের ফি একটি হিসাব কোডের মাধ্যমে পরিচালনা করার সুপারিশ করে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সুরক্ষা বিভাগের সচিব, আইজিপি ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএস/বিএ