হাজার টাকায় নকশী বেডশিট
আগাগোড়া সুই-সুতার মসৃণ কাজ করা নকশী বেডশিট। দেখলেই যে কোনো রুচিশীল মানুষের পছন্দ হবে। দামও তুলনামূলক সস্তা। প্রতিটির মূল্য ১ হাজার টাকা। ভাবছেন রুচিশীল বিছানার চাদর এমন দামে কোথায় পাবেন? তাহলে ঘুরে আসুন মতিঝিল থানার পাশে অবস্থিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) ভবন।
সেখানে বিসিকের উদ্যোগে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ‘কারুশিল্প ও বর্ষামেলা’। ভবনের নিচ তলায় রোববার শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত। মেলায় ছেলে-মেয়াদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক, নকশী করা বিছানার চাদর, নকশীকাঁথা, তাঁত ও জামদানি শাড়ি, পাটের হস্তশিল্প, নারীদের জুয়েলারি সামগ্রীসহ হস্ত ও কুটির শিল্পজাত পণ্য স্থান পেয়েছে।
যা নিয়ে এসেছেন হস্ত ও কুটির শিল্প পণ্যের অর্ধ শতাধিক উদ্যোক্তা। তাদের কেউ কেউ নিজের বাড়িতে বিক্রি করেন এসব পণ্য। আবার কিছু উদ্যোক্তা মার্কেটে দোকান নিয়ে ব্যবসা করছেন। রাজধানীর অভিজাত অঞ্চলেও আছে এই উদ্যোক্তাদের কারও কারও প্রতিষ্ঠান। এদের সবাই কোনো না কোনো সময় বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
এমনই একজন উদ্যোক্তা রাজধানীর টিকাটুলির ডালিয়া। বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বছর পাঁচেক আগে শুরু করেন নারীদের থ্রি-পিস, নকশীকাঁথা, নকশী বেডশিটের ব্যবসা। নিজের বাসা-বাড়িতেই চলছে এই উদ্যোক্তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম। বাসায় বসে থ্রি-পিচ, নকশীকাঁথা, নকশী করা বেডশিট বিক্রির পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মেলাতেও অংশ নিচ্ছেন ডালিয়া।
বিসিকের উদ্যোগে এবার আয়োজিত কারুশিল্প ও বর্ষামেলায় নিজের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন এই উদ্যোক্তা। যার মধ্যে রয়েছে এক হাজার টাকা দামের আগাগোড়া সুই-সুতার কাজ করা নকশী বেডশিট। থ্রি-পিস আছে ৫০০-৪০০০ টাকা দামের। আর নকশীকাঁথা আছে ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের।
নিজের ব্যবসা ও পণ্য সম্পর্কে এই উদ্যোক্তা জাগো নিউজকে বলেন, বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসা শুরু করি। নিজের বাড়িতেই ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাচ্ছি। প্রতিদিন ভালই বিক্রি হয়। ক্রেতাদের সব সময় রুচিশীল পণ্য দেয়ার চেষ্টা করি। কিছু পণ্য আছে নিজস্ব মানুষ দিয়ে তৈরি করি। আবার কিছু পণ্য আছে বাহির থেকে কিনে বিক্রি করি।
মেলার বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডালিয়া বলেন, যে কোনো মেলার প্রথম দিন বিক্রি কম হয়। কারণ প্রথম দিন মানুষ সাধারণত মেলায় ঘুরতে আসেন। তারপরও মোটামুটি ভালো বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হয়েছে।
মেলায় অংশ নেয়া আরেক নারী উদ্যোক্তা দনিয়ার জুলেখা নিয়ে এসেছেন রকমারি থ্রি-পিস ও বেডশিট। তিনিও ডালিয়ার মতো নিজের বাড়ি থেকেই থ্রি-পিস, বেডশিট, নকশী কাঁথা বিক্রি করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন মেলাতেও অংশ নেন।
এই উদ্যোক্তা জাগো নিউজকে বলেন, আমার কাছে ৫০০-৩৫০০ টাকা দামের থ্রি-পিস আছে। এসব থ্রি-পিস মার্কেট থেকে কিনে বিক্রি করি। বেডশিট ও নকশী কাঁথায় নিজস্ব লোক দিয়ে হাতের কাজ করিয়ে নেই। নিজেও কিছু কিছু কাজ করি। বিসিক থেকেই এসব কাজের প্রশিক্ষণ নিয়েছি।
তিনি বলেন, ক্রেতারা চাইলে মেলা থেকেই ৫০০-১৫০০ টাকা দামের বেডশিট কিনে নিয়ে যেতে পারবেন। আমরা যে নকশী কাঁথা তৈরি করি তার দাম ১০০০-২৫০০০ টাকা। তবে দামি নকশীকাঁথা এখনও মেলাতে নিয়ে আসিনি। কেউ অর্ডার দিলে নিয়ে আসব।
নিজের পণ্য সম্পর্কে শাহানা জাগো নিউজকে বলেন, আমার স্টলে নারীদের নাকের জুয়েলারি আছে ২০-৫০ টাকা দামের। কানের দুল আছে ৩০-৩০০ টাকা দামের। গলার জন্য আছে ১০০-৩০০ টাকা দামের। হাতের ব্রেসলেট আছে ১০০-১০০০ টাকা দামের। তবে মেলায় যে দামে বিক্রি করছি, বেইলি রোডের দোকানে দাম তার থেকে একটু বেশি পড়বে।
জাগো নিউজকে জাহাঙ্গীর বলেন, ক্রেতারা মেলা থেকে ২৫০০ টাকা দিয়ে রুচিশীল জামদানি শাড়ি কিনতে পারবেন। জামদানির পাশাপাশি অন্যান্য শাড়িও আছে আমাদের কাছে। এসব শাড়ির দাম ১০০০-২৫০০ টাকার মধ্যে। শাড়ির পাশাপাশি ৬০০-১৮০০ টাকা দামের থ্রি-পিসও আমরা বিক্রি করছি।
বিক্রি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও বিক্রি সেইভাবে জমে উঠেনি। দর্শনার্থীরা আসছেন, ঘুরে ঘুরে পণ্য দেখছেন। কেউ কেউ দামাদামি করে চলে যাচ্ছেন।
এমএএস/এমআরএম/এমএমজেড/এমএস
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি এ সপ্তাহে, ক্যাডার-ননক্যাডারে পদ ৩৭০১
- ২ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ, ওষুধে ব্যয় ২০ শতাংশ
- ৩ জাপান গার্ডেন সিটিতে বিষ প্রয়োগে কুকুর হত্যার অভিযোগে থানায় জিডি
- ৪ ‘রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ যেন হারিয়ে না যায়’
- ৫ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক