‘ধানের বাজার সিন্ডিকেটদের হাতে'
এ বছর কৃষকরা বাম্পার বোরো ধান উৎপাদন করেছে। বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। সরকার মণপ্রতি ১ হাজার ৪০ টাকা বোরো ধানের দাম নির্ধারণ করলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র না থাকায় এবং উপজেলা খাদ্য অফিসে ধান ক্রয়ের দুর্নীতি ও হয়রানির কারণে কৃষক লাভজনক দামে ধান বিক্রি করতে পারছে না।
ফলে কৃষকের মহাজনী ও এনজিও ঋণ পরিশোধ করার চাপে পড়ে মধ্যস্বত্বভোগী চাতাল মালিকের ফড়িয়া দালালদের কাছে লোকসানে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারও ধানের বাজার সিন্ডিকেটদের হাতে তুলে দিয়েছে। কৃষকের ধানের লাভজনক দাম নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র ও পল্লী রেশন চালু করতে হবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এমন অভিযোগ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ধানসহ অন্যান্য ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র ও পল্লী রেশন চালু, কৃষকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস.এম সবুরের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল হক, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাংলাদেশ কৃষক-ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা, বিপ্লবী কৃষক সমিতির সভাপতি আনসার আলী দুলাল, বাংলাদেশ কৃষক ফোরামের কার্যকরী সভাপতি মমিনুর রহমান বিশাল, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সংগঠক ফখরুদ্দিন কবির আতিক।
নেতারা বলেন, কৃষকের ১ মণ ধান উৎপাদন করতে প্রায় ৯০০ টাকার বেশি খরচ হলেও লোকসানে ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা মণ ধান বিক্রি করছে কৃষক। কৃষক ধান উৎপাদন করলেও দামের বিক্রয় মূল্য ও বিক্রয় ব্যবস্থাপনা কৃষকের হাতে থাকে না।
তারা বলেন, সারাদেশে প্রায় ২ লক্ষ সার্টিফিকেট মামলা কাঁধে নিয়ে গ্রেফতারের ভয়ে কৃষক পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেও অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে না। অবিলম্বে কৃষকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করে বিনা সুদে ও সহজশর্তে কৃষি ঋণ দিতে হবে। এছাড়াও আগামী বাজেটে কৃষি খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে ও কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে হবে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা সেকান্দার হায়াত, প্রগতিশীল কৃষিবিদ কেন্দ্রের সভাপতি ড. সামসুল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শম্পা বসু ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ।
এফএইচএস/এমআরএম/এমএস