শীর্ষ ৫ মাদক ব্যবসায়ীর একজন ছিলেন নজু
রোববার রাতে রাজধানীর মিরপুরে ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত নজরুল ইসলাম ওরফে নজু সরদার দেশের শীর্ষ পাঁচ মাদক ব্যবসায়ীর একজন ছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, নজু চলন্তিকা বস্তির শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ছিল। দেশে যখন থেকে মাদকের কেনা-বেচা শুরু তখন থেকেই তার নাম বিক্রেতাদের তালিকায় প্রথম ৫ জনের মধ্যে আছে।
এর আগে রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মিরপুরের রূপনগর ‘ট’ ব্লকে সরকারি কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ভবনের পাশে মাদক কেনাবেচার সময় এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
কে এই নজু?
জানা গেছে নজুর বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। তার বাবা আবদুল আলী কাজী এলাকায় কৃষিকাজ করতেন। নজুরা ৩ ভাই, ৫ বোন। প্রথমে নজুর বড় দুই ভাই তোফাজ্জল কাজী ওরফে তোফা কাজী ওরফে তোফা সর্দার ও মেজ ভাই বাবুল কাজী ওরফে বাবুল সর্দার ঢাকায় এসে কারওয়ান বাজারে গাঁজা বিক্রি শুরু করেন। এরপর ভাইয়ের পথ ধরে মিরপুরে গাঁজা বিক্রি দিয়ে মাদক বিক্রিতে যোগ দেন নজু।
তার সম্পদের সঠিক হিসাব কোনো সংস্থার কাছে না থাকলেও গোয়েন্দারা জানান এই অংক ৫০ কোটির কম নয়।
অভিযান পরিচালনাকারী ডিবি পুলিশ (পশ্চিম বিভাগ) জানিয়েছে, নজু মুন্সিগঞ্জের জান্নাতুল ভিলায় বসে তার ‘মাদক সাম্রাজ্যের’ খোঁজ খবর রাখতেন। বাংলাদেশে যখন থেকে মাদকের কেনাবেচা শুরু, তখন থেকেই নজুর নাম বিক্রেতাদের তালিকার প্রথম পাঁচজনের মধ্যে। তিনি মিরপুরের চলন্তিকা ও ঝিলপাড় এলাকায় আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে মাদক বিক্রি করতেন।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নজু সর্দার মুন্সিগঞ্জে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হলে তিনি বরিশালে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। মুন্সিগঞ্জে গ্রামের বাড়ির চারতলা ভবনসহ এখানেই কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি তার। তিনি মিরপুরের চলন্তিকা বস্তির ২৫টি ঘর থেকে মাদক বিক্রি কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ কাজে পরিবারের সদস্যরা তাকে সাহায্য করতো।
২০১৬ সালে র্যাব-৪ নজুকে ধরতে চলন্তিকা বস্তিতে অভিযান চালায়। সে সময় বস্তির নারীরা ভিতরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নজুকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এরপর নজুর খোঁজে গত ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ এবং ১১ মার্চ অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। তবে সেখানে পাওয়া যায়নি তাকে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান জানান, নিহত ‘নজু’ চলন্তিকা বস্তির শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মিরপুর, পল্লবী ও রূপনগর থানায় ২২টি মাদক সংক্রান্ত মামলা রয়েছে।’
এর আগে রোববার (২৭ মে) মিরপুর এলাকায় মাদক কেনাবেচা হবে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির (পশ্চিম বিভাগ) একটি দল রাত ৩টার দিকে সেখানে অভিযান চালায়। ডিবির দাবি, তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে নজুসহ মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ওপর গুলি চালায়। এ সময় ডিবিও পাল্টা গুলি চালালে সেখানে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নজুকে মৃত ঘোষণা করেন।
এআর/এমএমজেড/পিআর