সংখ্যালঘু মনে করে দেশ ত্যাগের কোনো কারণ নেই : হানিফ
শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে দেশের মানুষ নিরাপদ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করে দেশ ত্যাগের কোনো কারণ নেই। সরকারের উপর আস্থা রাখুন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন সরকারকে পাশে পাবেন।
শুক্রবার বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ‘অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনের তিন দশক’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিগত সরকারের সময় শুধু সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত না পুরো দেশের মানুষই নির্যাতিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে হত্যা করা হয়। দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক, সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়। ফলে, মনে করার কোনো কারণ নেই যে ওইসব সরকারের সময় শুধুমাত্র হিন্দুরা অনিরাপদ। তাই কোনো আঘাত আসলে অভিমান করে দেশ ত্যাগ নয় আসুন জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে স্বাধীনতার চেতনা সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করি।
হানিফ বলেন, এদেশের অনেক রাজনৈতিক দলের নেতারা ধর্মকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা বিশ্বাস করি, যার যার ধর্ম তারা নিরাপদে শৃঙ্খলভাবে পালন করবে।
মাদক নির্মূল অভিযানকে দেশের মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ও একশ্রেণির সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এটাকে নিয়ে রাজনীতি করছেন। বর্তমানে মাদক বিরাটকার ধারণ করার কারণেই সরকার জিরো টলারেন্স নীতি মাথায় রেখে কঠোর অবস্থানে নেমেছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে তা বিচারবহির্ভূত কিছু না। সুতরাং এ নিয়ে রাজনীতি করার কিছু নেই।
অনুষ্ঠানে ‘অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনের তিন দশক’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। তিনি তার প্রবন্ধে আগামী সংসদ জাতীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ধর্মীয় রাষ্ট্র নয়, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই’, ‘যার ধর্ম তার কাছে রাষ্ট্রের কী বলার আছে’, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, এসব স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা পথ চলে আসছি। আমাদের এ আন্দোলনের ভিত্তি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার ৪৭ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে অনেকেরই বিচ্যুতি ঘটছে। কিন্তু আমাদের এ সংগঠন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে আঁকড়ে ধরে আছে।
অনুষ্ঠানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- কোনও রাজনৈতিক দল বা জোট আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে এমন কাউকে মনোনয়ন দেবে না যারা অতীতে বা বর্তমানে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে বা রাজনৈতিক নেতৃত্বে থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী, স্বার্থবিরোধী কোনও প্রকার কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বা আছেন।
আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণসহ জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের নেতা খালেকুজ্জামান, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রমুখ।
এইউএ/জেএইচ/পিআর