সড়কেই ঢেউ
জলাবদ্ধ রাস্তা, ঝড়ছে বৃষ্টি, নেই পর্যাপ্ত গণপরিবহন। বুধবার সকালে যারা কাজে বেরিয়েছেন তাদের পড়তে হয়েছে এমন সীমাহীন বিড়াম্বনায়। সকাল থেকে রাজধানীতে বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সড়ক। পানিতে ডুবে থাকা সড়কের মধ্যে দিয়ে যখন যানবাহন চলছে তখনই সড়কে উঠছে ঢেউ।
আজ সকালে বৃষ্টির ফলে রাজধানীর মিরপুর কাজীপাড়ার পুরো রাস্তা জলবদ্ধ হয়ে আছে। সকালে যারা কাজে বেরিয়েছেন তারা পড়েছেন ভোগান্তিতে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও দেখা মিলছে না গণপরিবহনের। যে দুই-একটি গণপরিবহনের দেখা মিলছে সেসবও একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে জলাবদ্ধয় ধীরগতিতে চলছে। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে সেগুলোতে উঠাই দায়।
বিপরীত দিকের রাস্তায় (আগারগাঁও থেকে মিরপুর ১০) জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। বৃষ্টি উপেক্ষা করে যারা সকালে কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশে বের হয়েছেন তারা পড়েছেন মহাবিপদে। একদিকে সড়কে হাঁটুপানি, অন্যদিকে গণপরিবহন সঙ্কট। এরমধ্যেই ছাতা মাথায় অফিসগামী মানুষকে হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে বাসের জন্য। এরই মধ্যে যখন জলাবদ্ধ সড়কে দিয়ে যানচলাচল করছে তখন সড়কে সৃষ্ট ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছে ফুটপাতে।
কাজীপাড়ায় এমন হাটু পানিতে দাঁড়িয়ে অফিসগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মাহাফুজুর রহমান। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেই কাজীপাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সড়কে এমন পানি থাকে দেখে মনে একটি নদী। আর এই সড়ক দিয়ে যখন বাস চলে তখন নদীর মতো বড় বড় ঢেউ সৃষ্টি হয়। প্রতিবছর কাজীপাড়া এমন জলাবদ্ধ হয় কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কেউই এর স্থায়ী সমাধান করেন না।
কাজীপাড়ায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
জলাবদ্ধতার এ চিত্র শুধু রাজধানীর কাজীপাড়ার নয়। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। রাজধানীর শেওড়াপাড়া, কালশি, মতিঝিল, আরামবাগ, বাড্ডা, মালিবাগ, কাঁঠালবাগান জুরাইন, দনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলমগ্ন হয়ে পড়ে রাস্তাঘাট, কাঁচাবাজার, পাড়া-মহল্লা।
ড্রেনেজ লাইন নিয়মিত পরিষ্কারের পর্যাপ্ত উদ্যোগ না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাজধানীর রাস্তাগুলো। ফলে একটু ভারী বর্ষণেই ছন্দপতন হয় রাজধানীবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। রাজধানীর পানি নিষ্কাশন পথগুলো আবর্জনায় ভরাট হয়ে থাকে। শত শত কোটি টাকা খরচ করে এসব আবর্জনা পরিষ্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়ন করলেও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মেলে না ঢাকাবাসীর।
সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, রাজধানীতে মূলত ১২ শতাংশ জলাভূমি থাকার কথা। কিন্তু সেখানে আছে মাত্র দুই শতাংশ। শহরের অধিকাংশ মাটি কার্পেটিং করা এবং নিম্নাঞ্চল ভূমিদস্যুদের দখলে। এসব কারণে ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন কিছুটা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। ঢাকায় ৬৫টি খাল ছিল, চারটি নদী ছিল, এখন সেগুলো নেই।
তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা হবে না। হলেও তা দুই-তিন ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হবে না।
এএস/এমবিআর/এমএস
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ শাহজালালে লাউঞ্জ চালু করায় প্রশংসা করলেন বিমান উপদেষ্টা
- ২ সংবিধান সংশোধনের একমাত্র অধিকার পার্লামেন্টের: হাসান আরিফ
- ৩ পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ
- ৪ ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রবাসীদের পাসপোর্ট পৌঁছানো হবে: আইন উপদেষ্টা
- ৫ মনোনয়ন বাণিজ্যে নষ্ট হচ্ছে এমপিদের চরিত্র: সাবেক সিইসি