ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চিকিৎসা সেবা হওয়া উচিৎ বিশ্বমানের : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৩:০১ পিএম, ১২ মে ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা হওয়া উচিৎ বিশ্বমানের। কেননা আমরা চিকিৎসা সেবায় সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি, নার্সিং সেবা উন্নত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। আজ যে ইনস্টিটিউট এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করছি তা চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

প্রধানমন্ত্রী শনিবার রাজধানী মুগদায় নার্সিং কলেজ অ্যান্ড ইনস্টিটিউট ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে দক্ষ এবং যোগ্য নার্স গড়ে তুলতে বিদেশে তাদের ট্রেনিং করানোর উদ্যোগ নিয়েছি। সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সিনিয়র নার্সদের বয়স সীমা সিথিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে যতগুলো ইনস্টিটিউট হয়েছে তার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছাতে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবার প্রসার ঘটাতে আমরা বেসরকারি খাতেও বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক করার অনুমোদন দিয়েছি। নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদ আমরাই করে দিয়েছি। নার্সরা যেন সম্মান্বিত বোধ করে এবং এ পেশায় যাতে আসতে কোনো দ্বিধাবোধ না করে সে কারণে তাদের পদবি বাড়ানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ডিপ্লোমা নার্সে ঢুকতে হলে সাইন্স সাবজেক্ট থাকতে হবে, এটা কেন? এটা হলে অনেকে এখানে পড়ার সুযোগ পাবে না। সাইন্সের যতটুকু জানা প্রয়োজন ততটুকু সিলেবাসে প্রবেশ করালেইতো হয়। শেষ পর্যন্ত আমার অনুরোধ রাখা হয়েছে। এন ফলে অনেকেই ডিপ্লোমা নার্স কোর্সে ভর্তি হতে পারবে। ৭টি নার্সিং ইনস্টিটিউটকে আমরা কলেজে উন্নীত করেছি।

‘বাংলাদেশে প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু আমরাই করেছি’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে আমাদের মা-বোনরা অবহেলিত থাকেন। তাদের চিকিৎসা দেয়ার জন্যই কমিউনিটি ক্লিনিক করা হয়েছে। বাড়ির আশপাশে হওয়ায় তারা নিজেরাই সেখানে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে। এখন আর কোনো নারীকে কারো ওপর নির্ভর করতে হয় না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রায় ৩০ প্রকার ওষুধ বিনা পয়সায় দেয়া হচ্ছে। এ ওষুধ যাতে চুরি করে কেউ বিক্রি করতে না পারে সে জন্য বিশেষ মোড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে। ঢাকা শহরের হাসপাতাল ভর্তি পদ্ধতি সহজ করা হয়েছে। এখন আর রোগীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন হাসপাতালে যে সব অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয়েছে তার একটি চাকা নষ্ট হলে পড়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে একটা বরাদ্দ রাখা যায় কিনা সেটার চেষ্টা করছি। যেহেতু এই অ্যাম্বুলেন্স গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাবহার হয় সে কারণে এটা যেন সব সময় সচল থাকে সে ব্যবস্থা করছি আমরা। বিগত দিনে যখন আগুন সন্ত্রাসে মানুষকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে তখন ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিট এ রোগী যেন আর ধরে না। ডাক্তার সামন্ত লাল সেন চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তারপরও সে সময় বিভিন্ন পোড়া রোগী দেখার ক্ষেত্রে ভলেন্টিয়ার সার্ভিস দিয়েছেন। এটাই হলো একজন প্রকৃত চিকিৎসকের মন মানসিকতা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে রোগীর সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। সে তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা কম। ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের কাজের ক্ষেত্রে সংযত হওয়া দরকার। কারণ সারাদিন সরকারি চাকরি করবেন আবার রাতের বেলায় প্রাইভেট চিকিৎসা করবেন তাতে তো মেজাজ এমনিতেই খিটমিটে হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে ১২৩ ভাগ বেতন বাড়িয়ে দিয়েছি। আপনারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবার যথেষ্ঠ উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু ডায়াগনস্টিকের ক্ষেত্রে কেন জানি ভুল হয়ে যাচ্ছে। তাই মেশিন চালানোর জন্য স্কিল লোক তৈরি করতে হলে কী কী করা প্রয়োজন তা জানাবেন। চিকিৎসা সেবায় আমরা দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর সফল উৎক্ষেপণ হওয়ায় আমরা তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাবো। পাহাড়েও ইন্টারনেট সেবা দেয়া সম্ভব হবে। শুধু বিনোদন নয় এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ই-চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া স্যাটেলাইটের কিছু অংশ ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর এখন অনেক বড় হয়েছে। এর সঙ্গে আমরা হাসপাতালও বৃদ্ধি করেছি। মুগদার এই প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার নার্স বের হবে এবং মানুষকে সেবা দেবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী তার এলাকায় নিজের পয়সায় একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করবেন, এর অনুমতি দেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিঙ্গাপুর, ভারতসহ উন্নত দেশের মত চিকিৎসা সেবায় আমরাও এগিয়ে যাব। তারা যদি পারে তাহলে আমরা কেন পারব না? আমাদেরও পারতে হবে।’

এফএইচএস/এসএমএমজেড/এমএস

আরও পড়ুন