এবার মোহাম্মদপুরে ময়লার স্তূপ থেকে নবজাতক উদ্ধার
রাজধানীতে আবারও ময়লার স্তূপ থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার ভোর ৫টার দিকে মোহাম্মদপুরের জনতা হাউজিংয়ের পার্শ্ববর্তী কাঁচাবাজারের সামনে রাখা ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে এক মেয়ে নবজাতকের দেখা পান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) এক নারী পরিচ্ছন্নকর্মী (ঝাড়ুদার)। পরে তার দেয়া খবরে পুলিশ এসে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ জানান, ভোরবেলা ডিএনসিসির এক নারীকর্মী ময়লা পরিষ্কার করতে এসে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। কাছে গিয়ে দেখেন কাপড়ে পেচানো এক মেয়ে নবজাতক। তখনও শিশুটির শরীরে সদ্যজন্ম নেয়ার আভা স্পষ্ট।
ওই নারীকর্মী বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন এক পরিদর্শককে জানালে তিনি মোহাম্মদপুর থানায় অবহিত করেন। এরপর থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। তাকে চিকিৎসার জন্য মোহাম্মদপুর টেম্পুস্ট্যান্ড সংলগ্ন গ্লাস আরমান হেলথ কেয়ারে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির দেখভাল করছেন থানার অপর উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন।
তিনি বলেন, ‘কে বা কারা শিশুটিকে রাস্তায় ফেলে গেছে তা জানা যায় নি। নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এব্যা পারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালের ৩ মার্চ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেকশনের ২০/ডি রোডের ১৭ নম্বর বাড়ির সামনে ড্রেনের পাশ থেকে দুই মাসের একটি মেয়ে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এছাড়া ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মের পরেই ভবন থেকে নিচে ফেলে দেয়া নবজাতককে উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে রমনা থানা পুলিশ। রমনার বেইলি রোডের পিঠাঘর-সংলগ্ন একটি বাসার চারতলা থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ ওই ছেলে নবজাতকটিকে ফেলে দেন মা বিউটি। ২৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকা পর ‘বেবি অব বিউটি’ মারা যায়।
এরপর গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি খিলগাঁওয়ের ৪২৭/সি ভবনের সামনে থেকে এক নবজাতককে দেখতে পেয়ে ওই ভবনের ৫ম তলার বাসিন্দা শাহিনুর বেগম তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যান। পরে পুলিশকে খবর দিলে প্রথমে শিশুটিকে খিলগাঁও খিদমা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
সর্বশেষ গত এপ্রিলেও জন্মের পরই আরেক নবজাতকের জায়গা হয় রাস্তায়। মা কিংবা বাবার নির্দয় আচরণের শিকার নবজাতক। মিরপুর স্টেডিয়াম গলির মুখে গত ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাচ্চাটির কান্নার আওয়াজ ও নড়াচড়া দেখতে পান নাফিসা ইসলাম অনন্যা। তার খবরে ছুটে আসেন স্বামী ইঞ্জিনিয়ার মেহেদি হাসান আহাদ। মাতৃস্নেহে বুকে নিয়ে বুঝতে পারেন নবজাতকের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। আসাদগেটের কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন নাফিসা-মেহেদি দম্পতি।
জেইউ/এমএমজেড/এমএস