চিকিৎসা পেশাকে ব্যবসায় পরিণত না করার আহ্বান
অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর জীবনাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে চিকিৎসাপেশা যাতে ব্যবসায় পরিণত না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবীণ চিকিৎসকরা।
বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এর শহীদ ডা. মিলন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য মরহুম অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তরা এ কথা বলেন।
তারা বলেন, গুণী শিক্ষক, মহান চিকিৎসক, রোগীর প্রতি অত্যন্ত দরদী মনের অধিকারী ও দক্ষ প্রশাসক হিসেবে অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী স্যারের অবদান জাতি চিরদিন মনে রাখবে।
বক্তারা বলেন, শিক্ষক হিসেবে তিনি তাঁর ছাত্রছাত্রীদের অন্তর দিয়ে ভালোবাসতেন, স্নেহ করতেন কিন্তু শিক্ষার মান ও নীতি-আদর্শের কাছে কোনোদিন আপোস করেননি। নৈতিকতা, দেশপ্রেম, দরদিমন, সততা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা, ন্যায়পরায়নতা, সর্বোপরি মানবিক গুণের অধিকারী অধ্যাপক ডা. এম. এ. কাদেরী স্যার ছিলেন চিকিৎসক সমাজসেবক, সৎ রাজনীতিবিদ ও মানব জীবনের জন্য এক আদর্শ ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।
বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় স্মতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম.আর খান, অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ডা. কাজী শহীদুল আলম, অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন মিয়া, অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান, অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. আলী আসগর মোড়ল, অধ্যাপক এস এ এম ডা. গোলাম কিবরিয়া, অধ্যাপক এম এ জলিল চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. ফজলুল কাদের, অধ্যাপক ডা. শফিকুর রহমান, ডা. চৌধুরী জামাল, ডা. রোকেয়া সুলতানা, ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো, মরহুম অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর কনিষ্ঠপুত্র মাসুক আলী কাদেরী, নার্সিং সুপারিনটেডেন্ট অব হাসপাতাল শান্তনা রানী দাস, চীফ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. শাহজাহান সিদ্দিকী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল ও ডা. নুজহাত চৌধুরী। অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী স্যার-এর জীবনী তুলে ধরেন কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক।
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, অধ্যাপক এম কাদেরী স্যারের একাগ্রতা ছিল সকল মানুষের জন্য অনুসরণীয়।
জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান বলেন, অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর সততা, নিষ্ঠা, ন্যায়পরায়নতা ও ইতিবাচক মন মানসিকতা ভবিষ্যত প্রজন্মকে উজ্জীবিত করবে।
অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম বলেন, দেশপ্রেম, রাজনীতি ও চিকিৎসা শিক্ষার দিক দিয়ে অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী ছিলেন আদর্শ ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর জীবনাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে চিকিৎসাপেশা যাতে ব্যবসায় পরিণত না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি দিতে হবে।
বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ‘আমার পিতৃ সমতুল্য অধ্যাপক ডা. এম.এ কাদেরী স্যার ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও দেশপ্রেমিক। তিনি দিন রাত পরিশ্রম করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে গেছেন।’
তিনি বলেন, অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী স্যারের নীতি ও জীবনাদর্শকে অনুসরণ করেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিচালনা করা হবে। কোনো রকম দলাদলি, কাজ বা দায়িত্বের প্রতি অবহেলা বর্তমান প্রশাসন মেনে নেবে না।
অন্য বক্তারা বলেন, অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী ছিলেন রোগীদের প্রতি অত্যন্ত দরদী ও যত্নবান। গভীর রাতেও তিনি রাউন্ড দিতেন। তিনি রোগীদের সামর্থ্যরে কথা চিন্তা করে ইনভেস্টিগেশনের চাইতে ক্লিনিশিয়ান বা ওষুধের মাধ্যমে রোগ নিরাময়ে অধিক গুরুত্ব দিতেন।
বক্তারা বলেন, শিক্ষক হিসেবে তিনি চিকিৎসা শিক্ষাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনিই রেডিডেন্সি কোর্স চালু করেছিলেন। ল্যাবরেটরি সার্ভিসের মানন্নোয়নে তিনি যথাযথ পদক্ষপ নিয়েছিলেন। আবার একজন রাজনীতিক হিসেবেও তিনি ছিলেন সৎ ও জনদরদী।
এমইউ/এসকেডি/আরআইপি