নিম্নমানের অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি তৈজসপত্রে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
স্বাস্থ্য ঝুঁকির অন্যতম কারণ হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি রান্নার তৈজসপত্র। নিম্নমানের এসব অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি রান্নার থালা, বাসন, পাতিল, মগ, জগ, বালতি প্রভৃতি খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটায়। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন- এসডো কর্তৃক প্রকাশিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
‘অ্যালুমিনিয়াম কুকওয়্যার : এ মেজর সোর্স অব লেড অ্যান্ড আদার টক্সিক মেটাল কনটামিনেশন ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় শনিবার। এসডোর প্রধান কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাবেক সচিব ও এসডোর চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ গবেষণাপত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন।
এসডোর মহাসচিব ও ইকোসিস্টেম বিশেষজ্ঞ ড. শাহরিয়ার হোসেন জানান, নিম্নমানের অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি রান্নার তৈজসপত্র যেমন রান্নার সময় সীসা, তামা, আর্সেনিক ও ক্যাডমিয়ামের মতো বিষাক্ত ধাতু নিঃসরণ করে খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটায় তেমনি অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র তৈরির কারখানাতেও বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ করে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। তিনি জানান, অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র রান্নার কাজে দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্বে বহুল প্রচলিত। তুলনামূলকভাবে সহজলভ্য হওয়ায় এর চাহিদাও ব্যাপক। কিন্তু অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র থেকে যে বিষাক্ত ভারী ধাতু নিঃসৃত হয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে তা অনেকেরই অজানা।
এদিকে এসডোর গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, রান্নার সময় স্থানীয় বাজারে প্রচলিত অ্যালুমিনিয়াম পাত্র হতে গড়ে যথাক্রমে ২১৮ মি. গ্রা. অ্যালুমিনিয়াম, ৬ মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক, ৭.৫ মাইক্রোগ্রাম ক্যাডমিয়াম ও ২ মাইক্রো গ্রাম সীসা নিঃসৃত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানবদেহে সীসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই, এটি অত্যন্ত অল্পমাত্রায় থাকলেও ক্ষতিসাধন করে থাকে। এছাড়া অন্য ধাতুগুলোও দেহে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। দেহে মাত্রাতিরিক্ত অ্যালুমিনিয়াম আলঝেইমার নামক স্নায়ুজনিত জটিল রোগের সূচনা ঘটায়। এছাড়া বিষাক্ত ভারী ধাতু দূষণে হাড়ের ক্ষয়সাধন, বুদ্ধিলোপ, কিডনির ক্রিয়ায় ব্যাঘাত, হৃদরোগ এবং আলসার হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে এসডোর চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, অ্যালুমিনিয়ামে বিষাক্ত দূষণকারী পদার্থের উপস্থিতির বিষয়টি বাংলাদেশের মানুষের কাছে নতুন এবং পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তিনি বলেন, আমাদের ইকোসিস্টেম, প্রাণিকূল ও মানবস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে এই বিষয়টির উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
এফএইচএস/ওআর/আরআইপি