মৎস্য খাতকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য করেছিলো বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী
দেশের অন্যান্য খাতের ন্যায় মৎস্য খাতকে বিএনপি-জামায়াত জোট ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার লুটপাট আর দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৫’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে জনগণকে উৎসাহিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাকৃতিক মৎস্য উৎপাদনের ক্রম নিম্নগতি উপলব্ধি করে চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে জনগণকে উৎসাহিত করেন। জাতির পিতা ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা ছেড়ে এই কর্মসূচির শুভ সূচনা করেছিলেন। তিনি পাট, চা, চামড়ার সাথে মাছকেও বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্য হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। জাতির পিতা ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন একদিন মৎস্য সম্পদই হবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। তখন বিএনপি-জামাত জোট আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্যান্য খাতের ন্যায় মৎস্য খাতকেও লুটপাট আর দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল।
আমরা বিএনপি-জামাত আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রেখে যাওয়া অচলাবস্থা কাটিয়ে তুলে দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করি। নতুন জলমহাল নীতিমালা, মৎস্য হ্যাচারি আইন ও বিধিমালা, মৎস্য খাদ্য ও পশুখাদ্য আইন ও বিধিমালা প্রণয়ণ করা হয়। আমরা জাতীয় চিংড়ি নীতিমালা ২০১৪ প্রণয়ণ করি। প্রকৃত চিংড়ি চাষীদের সহায়তার জন্য ঘের প্রাপ্তি, চিংড়ি প্লট নবায়ন এবং ইজারা নীতিমালা প্রণয়ণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক জলাশয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, মাছের আবাসস্থল উন্নয়ন, অভয়াশ্রম স্থাপন, জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পরিবেশ বান্ধব ও উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর মৎস্যচাষ ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে ৩৫ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে যা পূর্বে ছিল ২৭ লাখ মেট্রিক টন।
মৎস্য সেক্টরে গত সাড়ে ছয় বছরে মৎস্যচাষী ও মৎস্যজীবীদের আয় ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাড়ে ছয় লাখেরও বেশী মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ প্রায় দেড় কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা মৎস্য সম্পদের সাথে সম্পর্কিত। ১৩ লাখেরও বেশি মানুষের সার্বক্ষণিক পেশা মৎস্য আহরণ। জিডিপিতে মৎস্যসম্পদের অবদান ৪ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে প্রায় ২২.৬০ শতাংশ। প্রাণিজ আমিষের ৬০ ভাগ যোগান দেয় দেশের মৎস্য খাত।
এসএ/এআরএস/পিআর