ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সাকার আপিলের রায় আজ

প্রকাশিত: ০৬:৪২ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৫

একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন ও দেশান্তরসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের রায়ে ‍মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিলের চুড়ান্ত রায় আজ। বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিশেষ বেঞ্চ জনাকীর্ণ আদালতে সাকার আপিলের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন।

বিশেষ বেঞ্চের সদস্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এর আগে গত ৭ জুলাই মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২৯ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বুধবার মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য তালিকার এক নম্বরে রয়েছে। রাষ্ট্র ও আসামি উভয় পক্ষের চূড়ান্ত শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ রায় ঘোষণার এই দিন ঠিক করে আদেশ দেন।

ওই দিন আদালতে সাকা চৌধুরীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এএসএম শাহজাহান। উপস্থিত ছিলেন তানভীর আহমেদ আল-আমিন ও হুজ্জাতুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন মেহেদী।

এর আগে গত ১ জুলাই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন থেকেই আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম শাহজাহান আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।

গত ১৬ জুন সাকা চৌধুরীর আপিল মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রথমে শুনানি শুরু করে ট্রাইব্যুনালের রায়, সাক্ষীদের সাক্ষ্য এবং রায় সংক্রান্ত নথিপত্র (পেপারবুক) নথিপত্র পাঠ করে আসামিপক্ষ। ১ জুলাই রাস্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ন্যায় ও অতি প্রয়োজন।

তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় সাকা চৌধুরী পাকিস্তানি বাহিনী ও নিজস্ব বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। একই দিনে চার স্থানে পর্যন্ত তাণ্ডব চালানো হয়। ৭১’ এর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত এসব অপরাধ হয়েছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ওপর বেশি হামলা করা হয়। যেন তারা দেশ ছেড়ে চলে যান। এসব অপরাধের চারটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল এ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছেন। তাই ওই দণ্ড বহাল রাখার আর্জি পেশ করে রাস্ট্রপক্ষ।

গত ১৬ জুন শুনানি শুরু করে ৮ কার্যদিবস  ট্রাইব্যুনালের রায়, সাক্ষীদের সাক্ষ্য-জেরা এবং রায় সংক্রান্ত নথিপত্র (পেপারবুক) উপস্থাপন করে আসামিপক্ষ। গত ৩০ জুন ও ১ জুলাই রাস্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করা হয়।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পর পরই গত ১৬ জুন শুরু হয় আপিল বিভাগে আসা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে পঞ্চম আপিলের শুনানি। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড রায়ের বিরুদ্ধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিল আবেদনটি আপিল বিভাগে পঞ্চম আপিল মামলা।

তার আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদীন ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর এ আপিল দায়ের করেন।

২০১৩ সালের ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাকা চৌধুরীকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা দেন।

রায়ে বলা হয়, সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ৯টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে ৩, ৫, ৬ ও ৮ নং অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড ২,৪ ও ৭নং অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে ২০ বছর করে জেল এবং ১৭ ও ১৮ নং অভিযোগে তাকে পাঁচ বছর করে জেল দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ২৩টি অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়। সাকা চৌধুরীকে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে হরতালে গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের এক মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তদন্তের স্বার্থে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। তখন থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এফএইচ/বিএ