ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

৫০ হাজার টাকায় কোলের সন্তান বিক্রি, অতঃপর...

সায়েম সাবু | প্রকাশিত: ০৭:২২ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

দুনিয়ার আলো দেখেছে সবেমাত্র চারদিন। তাতেই কেনাবেচার বাজারে ওঠতে হয়েছে। যে মা দশ মাস গর্ভে ধরেছেন, সেই মা-ই বিক্রির জন্য খদ্দের ডেকেছেন। কোলের সন্তান বিক্রির জন্য আরেক নারীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাও নিলেন। এরপর মাদকাসক্ত বাবা সন্তান বিক্রির টাকা নিয়ে পালালেন। অতঃপর...

বুধবার দুপুরের ঘটনা। সড়কে ব্যস্ততা খানিকটা কম। ছোট আকারের জটলা। জটলার মাঝেই হাতিরঝিল সংলগ্ন মগবাজার ফ্লাইওভারের নিচে শীর্ণকায় একটি শিশু নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে। সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তিনজন পুলিশ সদস্যও এসে যোগ দিলেন তাতে।

চারদিনের শিশুকে বুকে আগলে রাখা নারী-ই ওর মা। ভেঙে পড়া শরীরে বুকফাটা চিৎকার করছে আর মাটিতে লুটে পড়ছে। নাম স্বপ্না। ফ্লাইওভারের নিচের ফুটপাতেই বসবাস। পলিথিনে মোড়া টংসম ঘরটিতেই জন্ম দিয়েছেন প্রথম সন্তান। সন্তান পেটে থাকতেই বিক্রির কথা বলেছিলেন বলে, ফুটপাতে বসবাসকারী অন্যরাও জানানেল। সন্তান বেচার কথা শুনে হাতিরপুলের মনি আক্তার নামের এক বিধবা এসেছেন টাকা নিয়ে। সব ঠিকঠাক করে স্বপ্নার হাতে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছেন।

ঠিক ওই মুহূর্তেই যেন ঘটনা ঠিক উল্টো দিকে মোড় নেয়। স্বপ্নার হাত থেকে টাকা কেড়ে নিয়ে দৌড়ে পালায় স্বামী। নেশাগ্রস্ত স্বামীর পেছনে ছুটেও আর আটকানো যায়নি। অন্যদিকে মায়ের কাছ থেকে শিশুটিকেও নিয়ে নেয় মনি আক্তার। শিশু এবং টাকা না পেয়ে নিঃস্ব স্বপ্না চিৎকার করতে থাকে। এক পর্যায়ে ছেলে ধরা বলে চিৎকার করতে থাকলে লোকজন ছুটে আসে। মনি আক্তারের কাছ থেকে সন্তান কেড়ে নেয় স্বপ্না। চিৎকার শুনে পুলিশেও ছুটে আসে। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে সন্তান দত্তক নিতে আসা মনি।

জাগো নিউজকে মনি আক্তার বলেন, স্বপ্না ও তার স্বামী মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিশুটিকে আমার কাছে দত্তক দিতে। বিনিময়ে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি স্বপ্নার হাতে টাকা দিই। এরপর টাকা নিয়ে দৌড়ে পালালো স্বামী। এখন শিশুও দিচ্ছে না, টাকাও দিচ্ছে না।

অন্যদিকে সন্তানের মা স্বপ্না বলেন, ‘আমি সন্তান বিক্রি করতে চাইনি। সে আমার স্বামীর হাতে টাকা দিয়েছে। সে টাকা নিয়ে পালায়া গেছে। আমার সন্তানকে বিক্রি করব না।’

কথা বলার এক পর্যায়ে সন্তানকে বুকে চেপে দৌড় দেয় স্বপ্নাও। পুলিশও দৌড় দেয় স্বপ্নাকে ধরতে। ততক্ষণে যানজট তীব্র হয়। নবজাতককে নিয়ে যানজটের চিপায় হারিয়ে যায় স্বপ্না। ক্লান্ত পুলিশ ফিরে আসে ভ্যানের কাছে। মনোযোগ দেয় ট্রাফিকের দায়িত্বে।

এএসএস/জেএইচ/আরআইপি

আরও পড়ুন