‘সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত নেই’
গাজীপুর এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সাত দিন আগে টহলসহ প্রতিটি কেন্দ্রে বিএনপি সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেন. ‘ইতিপূর্বেও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনাররা বলেছেন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সেনা মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত নেই।’
মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে একথা বলেন তিনি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে ৬ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল ইসি সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীসহ সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়।
তবে বৈঠক শেষে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়েছেন তারা। নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি চেয়ে তার মুক্তি চাওয়া হয়।
তবে বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে সচিব জানান। তিনি বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন বা খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আদৌ কোনো আলোচনা হয়নি।’
সচিব আরও বলেন, বিএনপির কিছু কিছু প্রস্তাব আইন, বিধি-বিধান এবং সংবিধানের আলোকে যেগুলো পূরণ করা যায় সেগুলো উনারা (ইসি) অবশ্যই পূরণ করবেন। যেমন- ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, পুলিশ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে পোশাক ব্যতীত অন্য কোনোভাবে তারা না ঘুরে এবং কমিউনিটি পুলিশিংকে যাতে কোনোভাবে ব্যবহার না করা হয়, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বিধান, নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন এগুলোর ব্যাপারে কমিশন একমত পোষণ করেছেন। আর অন্যান্য বিষয়গুলো যেমন ইভিএম, সেবাবাহিনী মোতায়েন, বিতর্কিত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা অন্যান্য বিষয়গুলো আইন ও বিধিবিধান সম্পর্কিত। এগুলো নির্বাচন কমিশন পরবর্তীকালে বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, কোনটা গ্রহণ করা যায় কোনটা গ্রহণ করা যায় না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছে- বিএনপি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাদের প্রস্তাব ও সুপারিশমালার বিষয়গুলো উনারা পরবর্তীকালে কমিশন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানাবে।
ইভিএম ব্যবহারে বিএনপির আপত্তির বিষয়ে তিনি জানান, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন বলেছে, নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা আইনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইভিএমের ব্যাপারে তাদের যদি কোনো সন্দেহ থাকে নির্বাচন কমিশন তাদের নিয়ে বৈঠক করে প্রত্যেকটি ইভিএম তাদের দেখাবে। এ ব্যাপারে তাদের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, আসুন দেখুন, এগুলো হ্যাক করা যায় কিনা।
তিনি বলেন, বিএনপি বিতর্কিত কর্মকর্তাদের তালিকা দেই নাই। একজনের নাম দিলেও ইসি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।
বৈঠকে অন্যান্য কমিশনার ছাড়াও নির্বাচন কমিশন সচিব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহামুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ এবং সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৫ মে ওই দুই সিটি কর্পোরশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল ১২ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়েছে ১৫ ও ১৬ এপ্রিল। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে শেষ দিন ২৩ এপ্রিল। এরপর ২৪ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।
এইচএস/জেএইচ/আরআইপি