কোটার বোঝা ৫৬ ইটে
খুবই ক্লান্ত। চোখে-মুখে সীমাহীন ক্লান্তির ছাপ। ঘাম ঝরছে দরদর করে। অার যেন পারছে না। বড়ই অসহায় জীবনযুদ্ধের এ বেলায়। গায়ে লেখা ‘গুলি করো, নতুবা কোটা সংস্কার করো’। কাঁধে ৫৬ ইটের বোঝা। রশি দিয়ে বেঁধে দেয়া হাতে-পায়ে ইটগুলো অার টানতে পারছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের শিক্ষার্থী রিপন।
এতগুলো ইট টানতে টানতে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গেছে এ তরুণের। চিৎকার করছেন ইটের বোঝা থেকে মুক্তি পেতে। তবুও মুক্তি মিলছে না। তরুণের এই প্রতীকী অভিনয়ে বাকরুদ্ধ হয় সবাই। স্লোগান, গান, হাতে তালি সব বন্ধ হয় গেল ক্ষণিকের জন্য। তরুণের অাশপাশে যারা বসা তাদের অনেকের চোখ তখন ছলছল।
তরুণের মতোই সবাই ৫৬ ভাগ কোটার বোঝা টেনে টেনে বড়ই ক্লান্ত যেন। রিপনের প্রতীকী প্রতিবাদ সবারই যেন মনের কথা। চাকরিক্ষেত্রে ৫৬ ভাগ কোটার সংস্কারের দাবিতে মুখরিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বর। হাজার হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে অান্দােলন করছেন দুদিন ধরে।
সোমবার বিকেলে নানা অায়োজনের মধ্য দিয়ে অান্দোলন চাঙা রাখার প্রয়াস চালায় শিক্ষার্থীরা। তারই অংশ হিসেবে রিপনের এই প্রতীকী প্রতিবাদ।
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রতিবাদী রিপন জাগো নিউজকে বলেন, অামরা তো মেধা দিয়েই দেশ গড়তে চাই। তাহলে সভ্যতার এই সময়ে কোটা নামের বৈষম্য কেন? কোটা নিয়ে কেন এমন নোংরা রাজনীতি।
তিনি বলেন, অামরা কোনো অনৈতিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি না। সঠিক মেধা মূল্যায়নের দাবিতে অান্দোলন। অামরা স্বপ্ন দেখছি দেশ গড়ার। সেখানে কেন এই প্রতারণা? অামরা কোটাপদ্ধতি বাতিল করার দাবি জানায়নি। দাবি কোটার সংস্কারের।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রত্যাশা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, অার পারছি না। কোটার অত্যাচারে জীবন ওষ্ঠাগত। বৈষম্য দূর করতেই কোটা পদ্ধতির প্রবর্তন, অথচ শতকরা ৫৬ ভাগ কোটাই অাজ চরম বৈষম্যের কারণ হয়েছে। অামরা এই অভিশপ্ত কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই। নইলে রক্ত দিয়ে অান্দোলন চালিয়ে যাব।
এএসএস/জেডএ/আরআইপি