দেশে ৬ লাখ ভিক্ষুক আছে : অর্থমন্ত্রী
দেশে ছয় লাখের মতো ভিক্ষুক আছে- এমন তথ্য জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনা যদি আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন তাহলে দেশে কোনো ধরনের ভিক্ষাবৃত্তি থাকবে না।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় নাট্যশালায় দুর্নীতি প্রতিরোধে শ্রেষ্ঠ কমিটির সদস্যদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মুহিত বলেন, বাংলাদেশে বেশিরভাগই প্রফেশনাল ভিক্ষুক এবং তাদের কিছু করা যায় না। আমার হিসাবে দেশে ছয় লাখের মতো ভিক্ষুক আছে, যাদের কোনোমতেই ভিক্ষাবৃত্তির বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। যতই আমরা সাহায্য করি না কেন তারা আবার (ভিক্ষাবৃত্তিতে) ফিরে যায়। এদের কোথাও (কাজে) বসানো হলে, একটা ঘরবাড়ি দেয়া হলেও কিছুদিন পর আসার সেই ভিক্ষাতেই ফিরে যায়। কিন্তু প্রয়োজনে ভিক্ষা- সেটা যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা শেখ হাসিনার সরকার করে রাখছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন অভাবে কেউ মারা যাচ্ছে এরকম চিত্র বোধ হয় আপনারা দেখেন না। আমার শৈশব-কৈশোর এমনকি যৌবনেও দেখেছি, বাগেরহাটে দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় মানুষ হঠাৎ না খেয়ে মারা যাওয়া খুব স্বাভাবিক ছিল। এখন কোথাও না খেয়ে মারা যায় না। অসুখে পড়ে খেতে না পারার কারণে মারা যেতে পারে। শুধু খাবারের অভাবে মানুষ মরে যাচ্ছে সেটা এখন দেখতে পাবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেটা চেষ্টা করছি, ভবিষ্যতে সমাজ যেখানে শুদ্ধাচার কৌশল অটোমেটিক মানুষ গ্রহণ করবে। যেখানে মিথ্যা কথা বলার প্রয়োজন হবে না। যেখানে অভাবে তার মৃত্যুর সুযোগ থাকবে না, যে কারণে তাকে ভিক্ষুক হতে হবে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন জেনারেশন শুদ্ধাচার কৌশল অনুসরণ করবে। তখন এন্টি করাপশন কমিশনেরও থাকার প্রয়োজন আছে। কারণ শুদ্ধাচারের প্রচার-প্রচারণা করা তখনও প্রয়োজন। একই সঙ্গে শাস্তিরও ব্যবস্থা থাকা উচিৎ কিন্তু শাস্তি প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিৎ নয়। দুদকের মামলায় ৭০ ভাগ শাস্তি পাচ্ছে শুনে খুশি হলাম। এটাই হবে ভবিষৎ। দুদক ওয়াচডগ হিসেবে থাকবে। তারা লোকজনকে নীতিকথা শুনাবে। দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে, সেটা ৮ বা ১০ বছর পরে আর বলবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীলের দেশের স্বীকৃতির পথে। আমরা সামাজিভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। অভাবের কারণে এখন আর কেউ দুর্নীতি করে না। আমাদের আরও উন্নতি হতো যদি আমরা লোভের কারণে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে।
কোনো কোনো অসাধু কোম্পানি সঠিক আর্থিক বিবরণী দেয় উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ইদানিং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনে কোনো কোনো অসাধু কোম্পানির লোকজন এমন আর্থিক বিবরণী দিচ্ছেন যা সঠিক নয়। আর এগুলো করছে সিএ ফার্ম। ওই সিএ ফার্ম আবার ভিন্ন ভিন্ন আর একটি আর্থিক বিবরণী ব্যাংকে এবং আয়কর বিভাগে জমা দিচ্ছেন। এটা কী করে সম্ভব? এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। বিষয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেখাবেন কিনা অথবা আপনি বললে আমরাও দেখতে পারি। কারণ এটা একটি দুর্নীতি।
অর্থমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে দুদক অনুসন্ধান করবে। আমরা চাই নৈতিকতার মানদণ্ডে থাকবো। আমরা চাই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো সব জায়গায় একই আর্থিক বিবরণী জমা দিবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশন এএফএম আমিনুল ইসলাম ও দুদক মহাপরিচালক জাফর ইকবাল প্রমুখ।
এমএ/এমবিআর/জেআইএম