এক মিনিট গাড়ি চলবে না, হাঁটবে না মানুষও
২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবসের রাতে শুধু এক মিনিট বিদ্যুৎহীনই থাকবে না দেশ, ওই সময়ে কোনো গাড়িও চলাচল করবে না, মানুষও হাঁটা থামিয়ে পথে দাঁড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
বুধবার সচিবালয়ে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রকল্প সম্পর্কে জানাতে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।
গণহত্যার রাতে ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশ বিদ্যুৎহীন (ব্ল্যাক আউট) থাকবে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়া এ সময় রাস্তায় চলতে থাকা গাড়ি চলবে না, থেমে যাবে। আমি হেঁটে চলছি, আমি হাঁটব না।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ কীভাবে টের পাবে যে কখন ৯টা বাজল, সবসময় তো মানুষের সঙ্গে ঘড়ি থাকে না। আমরা চিন্তা করছি অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে ৯টার দুই মিনিট আগে থেকে আমরা সাইরেন বাজাতে পারি কি না! বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা করতে পারি কি না! পাবলিক প্লেসগুলোতে সংবাদ পৌঁছানোর জন্য যেসব উপকরণ আছে সে ব্যাপারে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।’
‘মাইকগুলো থেকে বলে দেয়া যে, আর দুই মিনিট পর ৯টা বাজবে। কারণ আমি হয়ত কাজ করছি, আমার মনে নেই যে বাতিটা নেভাতে হবে।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘এর ফলটা হলো এই, যখন এক মিনিট বাতি বন্ধ থাকবে বাড়ির সবাই জানতে চাইবে বাতিটা কেন বন্ধ করা হলো, শিশুরাও জিজ্ঞাসা করবে। তখন আমরা বলতে পারব- এইদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের বিশেষ করে ঢাকার ঘুমন্ত শিশু, নারী, বৃদ্ধ, নিরস্ত্র নির্বিশেষে সব পেশার মানুষের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ চালিয়েছিল। এর চেয়ে ঘৃণ্য কাজ আর কিছু নেই।’
সরকার এবার ভিন্ন মাত্রায় আন্তর্জাতিক দিবসের মতো গণহত্যা দিবস পালন করবে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালন করা হয়, কিন্তু এর পেছনে কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। একটি দিবস পালন করতে হয়, তাই পালন করা হচ্ছে। ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। গণহত্যার তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের বোঝানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের জন্য আমরা যে কোনো সময়ই আবেদন করতে পারি। কিন্তু অধিকাংশ সদস্যের সমর্থন না পেয়ে তা বাতিল হলে সেটা আমাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। এখন আমরা জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন নেয়ার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ২৫ থেকে ৩০টি রাষ্ট্রের মৌখিক সমর্থন পেয়েছি যে এটি করা উচিত।’
কবে নাগাদ বাংলাদেশের প্রস্তাব জাতিসংঘের কাছে দেয়া হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন আশাবাদী হব প্রস্তাব করলে এটি পাস করে আনা যাবে তখনই প্রস্তাব করা হবে। তবে এটি কূটনৈতিকভাবে হবে।’
আরএমএম/জেডএ/আরআইপি