ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

রূপপুরে ভারতের বিশেষজ্ঞ নিয়োগ : মন্ত্রিসভায় উঠছে আজ

মেসবাহুল হক | প্রকাশিত: ০১:১৬ এএম, ১৯ মার্চ ২০১৮

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনায় ভারত থেকে পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ সেবাগ্রহণের পর এবার বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আজ (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য জনবল তৈরিসহ বিভিন্ন কারিগরি পরামর্শ ও বিশেষজ্ঞ সেবাগ্রহণের লক্ষ্যে ভারতের বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা যাবে।

এছাড়া প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য তাদেরকে ওনার্স ইঞ্জিনিয়ার (Owners Engineer) হিসেবে নিয়োগ করা যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার বিষয়ে পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ সেবাগ্রহণের লক্ষ্যে ভারতের এটমিক এনার্জি বিভাগের অধীন গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিফ এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের মধ্যে ইন্টার এজেন্সি এগ্রিমেন্ট মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন করে।

jagonews24

মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন রাশিয়ান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্তে রাশিয়ান ফেডারেশন ছাড়াও একই ধরনের টেকনোলজি ব্যবহার করে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ভারতের পরামর্শক/বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সহায়তা গ্রহণ করা আবশ্যক।

এতে আরও বলা হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজে ভারতীয় বিশেষজ্ঞগণকে নিয়োগের শর্তাবলি সম্বলিত ইন্টার এজেন্সি এগ্রিমেন্টের জন্য ভারত স্মারকের একটি খসড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠায় । এ খসড়া চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরমাণু কমিশনের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ২০১৮ সালের ৪ ও ৫ জানুয়ারি ভারত সফর করেন।

সফরকালে ভারতের মুম্বাইয়ে খসড়া স্মারকটির ওপর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেগোসিয়েশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সফরেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল কর্তৃক ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বর্ণিত খসড়া স্মারকটি চূড়ান্তকরতঃ অনুস্বাক্ষর করা হয়।

চূড়ান্তকরতঃ অনুস্বাক্ষরিত খসড়া স্মারকটির ওপর লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং/মাতমত গ্রহণ করা হয়েছে। লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ কর্তৃক যে সব বিষয়ের ওপর মাতমত প্রদান করা হয়েছে সে সব বিষয় অনুস্বাক্ষরিত খসড়া স্মারকে যথাযথভাবে সন্নিবেশিত করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন জানিয়েছে।

jagonews24

এছাড়া অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত নেগোসিয়েশন কমিটি আলোচ্য খসড়া স্মারকটি চূড়ান্ত করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে অনুস্বাক্ষরিত খসড়া স্মারকটি অনুমোদন করা যায়।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, অনুস্বাক্ষরিত আলোচ্য খসড়া স্মারকটি স্বাক্ষরিত হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার বিষয়ে জনবল তৈরিসহ বিভিন্ন কারিগরি পরামর্শ ও বিশেষজ্ঞ সেবাগ্রহণের লক্ষ্যে ভারতের বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা যাবে। এছাড়া প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য তাদের ওনার্স ইঞ্জিনিয়ার (Owners Engineer) হিসেবে নিয়োগ করা যাবে।

এতে আরও বলা হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার বিষয়ে পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে ভারতের এটমিক এনার্জি বিভাগের অধীনস্থ গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিফ এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের মধ্যে বিষয়োল্লেখিত ইন্টার এজেন্সি এগ্রিমেন্ট গত ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদিত হয় এবং একই বছরের ৮ এপ্লিল নয়াদিল্লীতে স্বাক্ষরিত হয়।

এতে আরও বলা হয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং ভারতের জিসিএনইপি’র মধ্যে মূল ইন্টার এজেন্সি এগ্রিমেন্টটি স্বাক্ষরের পূর্বে মন্ত্রিসভার অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে। বিধায় অনুস্বাক্ষরিত খসড়া স্মারকটি স্বাক্ষরের জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন গ্রহণ আবশ্যক।

উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে ২০২২ সালে। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের দুটি ইউনিট থেকে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। ঋণ হিসেবে রাশিয়া দিচ্ছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। বাকিটা দিচ্ছে বাংলাদেশ।

এমইউএইচ/জেএইচ

 

আরও পড়ুন