ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার পাবে ৫০ হাজার ডলার

রফিক মজুমদার | প্রকাশিত: ০৯:৩৪ পিএম, ১৬ মার্চ ২০১৮

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় প্রত্যেক নিহতের পরিবার পাবে কমপক্ষে ৫০ হাজার ডলার (৪১ লাখ ৬০ হাজার টাকা)। এছাড়া আহতদের দেয়া হবে চিকিৎসা সেবা ও নগদ অর্থ।

ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া এক মাসের মধ্যে শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ। এর আগেও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষও একই তথ্য জানিয়েছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ জাগো নিউজকে বলেন, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইকাও) এর বিধান অনুযায়ী নিহত পরিবার পাবে কমপক্ষে ৫০ হাজার ইউএস ডলার। একই নিয়ম অনুযায়ী আহতদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় দেয়া হবে ক্ষতিপূরণ। সেক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে হতে পারে কম-বেশি।

Biman-2

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জন্য আমরা আগামীতে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। নিহত ও আহতদের পরিবার চাকরি চাইলেও সে ব্যবস্থা আমরা করবো।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শফিক শামিম জাগো নিউজকে বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ক্ষয়-ক্ষতি নির্ধারণে ইতোমধ্যে সার্ভেয়ার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সার্ভে রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, দাবি নিষ্পত্তির কাজে আশানুরূপ অগ্রগতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের দুটি সার্ভে টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তারা ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ক্ষতিয়ে দেখছে। তাদের প্রতিবেদন হাতে পেলেই বোঝা যাবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সে অনুসারে দাবি পরিশোধ করা হবে। তবে আমরা আশা করছি এক মাসের মধ্যেই দাবি পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের দুর্ঘটনা কবলিত বিএস ২১১ ফ্লাইটের জন্য কমপ্রিহেনসিভ ইন্স্যুরেন্স কাভারেজ নেয়া হয়েছে। মোট লায়াবিলিটি ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে প্লেনের জন্য কাভারেজ ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর বিমানের টিকিট কাটলেই যাত্রীরা বীমার আওতায় চলে আসে।

শুক্রবার নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহত মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও আলমুন নাহার এ্যানি দেশে ফিরেছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের গ্রহণ ও পরিবারকে সমবেদনা জানাতে উপস্থিত হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

hospital

পরে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিমান দুর্ঘটনা যে কারণেই হোক না কেন, সেটা মুখ্য বিষয় নয়। এখন আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে যারা নিহত হয়েছেন তাদের মরদেহ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। এ বিষয়ে আমরা এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে যা যা করণীয় সরকারের পক্ষ থেকে তা করা হচ্ছে। আহতরা যেখানে, যে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান- সে ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সঙ্গে আমরা দেখা করেছি। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের কথা আমরা জানিয়েছি। জীবনের মূল্য কখনও অর্থের বিনিময়ে হয় না। তবে যে নিয়ম আছে, সে নিয়ম অনুযায়ী হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেল ৩টা ৩৩ মিনিটে বিজি-০০৭২ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহত মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও আলমুন নাহার এ্যানি। বিকেল ৪টার দিকে তাদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশের অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশে রওনা দেয়। এর আগে বৃহস্পতিবার দেশে ফেরেন শেহেরিন আহমেদ। তিনিও বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

biman

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১২ মার্চ) ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বাকিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।

বিমানটিতে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, নারী ২৮ ও দু’জন শিশু ছিল।

আরএম/জেইউ/এমআরএম/পিআর

আরও পড়ুন