স্বামী-সন্তানের মরদেহ রেখেই ফিরতে হচ্ছে এ্যানিকে
নেপালের কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনায় আহত শেহরিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। একই দুর্ঘটনায় আহত আরও তিন বাংলাদেশিকে আজ (শুক্রবার) দুপুরে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তারা হলেন- মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও আলমুন নাহার এ্যানি।
জানা গেছে, বাংলাদেশে নিয়ে আসা শেহরিন আহমেদসহ মোট চারজন আহত বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত নিয়ে আসার অনাপত্তি দিয়েছে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ (কেএমসি)। তাদের মধ্যে থেকে গতকাল শেহরিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে মেহেদী হাসান ও কামরুন্নাহার স্বর্ণার সঙ্গে আজ (শুক্রবার) দুপুরের আহত আলমুন নাহার এ্যানিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলেও তাকে রেখে আসতে হচ্ছে স্বামী ও সন্তানকে। কারণ তারা আর জীবিত নন। বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে তাদের এখন ঠাঁই পেয়েছেন নেপালের ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি (টিইউ) টিচিং হাসপাতালের হিমঘরে।
নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে গত ১২ মার্চ বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার বিমানে গাজীপুরের শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামের ফারুক ও মেহেদী হাসানের পারিবারের পাঁচ সদস্য ছিলেন। বিমানে থাকা দুই দম্পতির পাঁচ সদস্য হলেন- নগরহাওলা গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে ফারুক আহমেদ (৩২) ও তার স্ত্রী আলমুন নাহার এ্যানি (২৫) এবং তাদের একমাত্র সন্তান প্রেয়সী (৩)। এছাড়া নগরহাওলা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান (৩৩) ও তার স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা আক্তার (২৫)।
তাদের মধ্যে মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা বেঁচে আছেন। এছাড়া আলমুন নাহার এ্যানি নিজের জীবন ফিরে পেলেও হারিয়েছেন স্বামী ফারুক আহমেদ ও তাদের একমাত্র সন্তান প্রেয়সীকে।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় গত ১২ মার্চ পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বাকিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।
বিমানটিতে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, মহিলা ২৮ ও দু’জন শিশু ছিল।
এআর/আরএস/এমএস