ঢামেক বার্ন ইউনিটে শেহরিন : ভিআইপি কেবিনে স্থানান্তর
নেপালের কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনায় আহত শেহরিন আহমেদকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে আনা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাকে আইসিইউ থেকে ভিআইপি কেবিনের ২ নম্বর বেডে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ঢামেকের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, যাবতীয় পরীক্ষা সম্পন্ন করে তাকে আইসিইউ থেকে ভিআইপি কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। যেহেতু শেহরিনের পা ভেঙেছে এবং ৮ থেকে ১০ শতাংশ বার্ন হয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞ প্লাস্টিক ও অর্থোপেডিক সার্জন দিয়ে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
‘প্রয়োজনে শেহরিনের জন্য চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে’ বলেও জানান বার্ন ইউনিটের প্রধান এ সমন্বয়ক।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘শাহরিন আহমেদকে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি অ্যান্ড বার্ন ইউনিট-৩ এ থেকে দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। তার পা ভেঙে গেছে এবং শরীরের ৮ থেকে ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ঢামেকে তার চিকিৎসার জন্য আমরা এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।’
শাহজালাল বিমানবন্দরে উপস্থিত জাগো নিউজের প্রতিনিধি জানান, শেহরিন আহমেদকে বহনকারী বিজি-০০৭২ ফ্লাইটটি বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ৪টা ১৭ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে দ্রুত তাকে ঢামেকের পাঠানো অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নেয়া হয়।
বিকেল ৫টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালে পৌঁছালে দ্রুত তাকে বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে নেয়া হয়।
শেহরিনকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার উদ্দেশে এর আগে ঢামেক থেকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও দুজন নার্স বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পৌঁছান। তারা হলেন- বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল এবং আইসিইউ'র নার্স ফারজানা আক্তার ও মরিয়ম আক্তার।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১২ মার্চ) ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বাকিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে।
বিমানটিতে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের এবং একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, মহিলা ২৮ ও দু’জন শিশু ছিল।
শেহরিন আহমেদ ছাড়া আরও তিন বাংলাদেশিকে কেএমসি হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ অনাপত্তি দিয়েছে। তারা হলেন- মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও আলমুন নাহার অ্যানি।
এ বিষয়ে নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস জাগো নিউজকে জানান, আহত শেহরিন আহমেদকে আজকেই (বৃহস্পতিবার) দেশে নেয়া হচ্ছে। সময় মতো বিমান আসলে নেপাল সময় দেড়টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে। এছাড়া বাকি তিনজনের কাগজপত্র ঠিক করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে তাদেরকে আগামীকাল (শুক্রবার) দেশে পাঠানো হবে।
সাদ্দাম হোসাইন/এমএআর/এমএস