যৌন হয়রানির শিকার তরুণীর জবানবন্দি নিয়েছে পুলিশ
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভাকে কেন্দ্র করে ঢাকার বাংলামোটর এলাকায় একটি মিছিল থেকে এক তরুণীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাতে এমন অভিযোগ এনে ফেসবুকে ওই তরুণী একটি পোস্ট করেন। এরপরই ভাইরাল হয় ঘটনাটি। নানা মহলে শুরু হয় সমালোচনা।
অনেকের প্রশ্ন তরুণীটির অ্যাকাউন্ট ভুয়া (ফেক) কি-না। অথবা মেয়েটি বিএনপি-জামায়াতের সদস্য কিংবা সরকারের বিরোধী মনোভাব থেকে ইচ্ছা করে এমন পোস্ট দিয়েছে কি-না।
পোস্টটি নিয়ে বুধবার রাত থেকেই কাজ শুরু করে পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম (সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং) বিভাগ। ইতোমধ্যে ওই পোস্ট দেয়া মেয়েটিকে খুঁজে পেয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার গ্রহণ করেছে তার জবানবন্দি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম (সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং) বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেয়েটির পোস্ট ভুয়া নয়। তার কাছ থেকে জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। তার দেয়া বর্ণনা ও ঘটনার সময় অনুযায়ী শাহবাগ, শান্তিনগর, বাংলামটরসহ এর আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্তে কারও সংশ্লিষ্টতা পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ঊর্ধ্বতনরা। তদন্ত চলছে।’
তিনি আরও বলেন, গতকাল (বুধবার) রাতে একাধিক স্পটে যৌন হয়রানি-সংক্রান্ত পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেসব তরুণীরাও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। প্রযুক্তিগত তদন্তের পর আমরা ধারণা করছি, সরকারকে বিব্রত করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে। কারণ বাংলামোটরের ঘটনা ছাড়া অন্য কোনো একাউন্টের অস্তিত্ব এখনও পাওয়া যায়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘প্রোমোটিং এডালসেন্ট নিউট্রিশন’ শীর্ষক এক সেমিনারের শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (বুধবার) বাংলামোটরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীকে হয়রানির ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ হাতে এসেছে। দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। অপরাধী যে দলেরই হোক ছাড় দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস-সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অনুষ্ঠানকে বিতর্কিত করতে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কিংবা গল্পের কথা শোনা যাচ্ছে। সত্য-মিথ্যা কতটুকু জানি না। হয়ত শিগগিরই তা উদঘাটিত হবে। উল্লিখিত ঘটনার আশপাশে সবখানেই সিসি-ক্যামেরা আছে। ঘটনা ঘটলে কারা কারা দায়ী এবং তাদের রাজনৈতিক পরিচয় কী তা খুঁজে বের করা কঠিন কিছু হবে না। না ঘটলেও হয়ত রটনার রহস্য উদঘাটিত হবে। উত্তেজিত হয়ে এখনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করে অপেক্ষা করাই ভালো।’
এর আগে বুধবার একটি ফেসবুক আইডি থেকে হয়রানির অভিযোগ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন ওই তরুণী। পোস্টে তিনি বাংলামোটরে মিছিলকারীদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তবে রাতে পোস্টটি সরিয়ে আরেকটি পোস্ট দেন ওই তরুণী। সেই পোস্টে উল্লেখ করা হয় ‘ভালো আছি, সুস্থ আছি। পোস্টটা অনলি মি করেছি, কারণ পোস্টটা রাজনৈতিক উসকানিমূলকভাবে শেয়ার করা হচ্ছিল। আমি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পোস্টটা দেইনি। প্লাস আমার কলেজকে জড়ানো হচ্ছিল এ ব্যাপারে। ব্যাপারটার সঙ্গে আমার কলেজের কোনো সম্পর্ক নাই।’
এআর/জেডএ/পিআর