ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আলো দেখতে শুরু করেছে বিমান ক্যাজুয়ালরা

রফিক মজুমদার | প্রকাশিত: ০৬:২১ পিএম, ০৬ মার্চ ২০১৮

অবশেষে ক্যাজুয়াল কর্মচারী-শ্রমিকদের শ্রম আইন ২০০৬ ধারা ১০৮ অনুযায়ী দ্বিগুণ হারে ওভারটাইম ভাতা পরিশোধ করতে সম্মত হয়েছে বিমান বাংলাদশে এয়ারলাইন্স। বিগত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিগুণ হারে ওভারটাইম ভাতা পাচ্ছেন বিমানে কর্মরত ক্যাজুয়াল কর্মচারী-শ্রমিকরা।

গত রোববার (৪ মার্চ) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক প্রশাসন মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে (এডমিন আদেশ নং-০৪/২০১৮, তারিখ: ৪ মার্চ) এই আদেশ জারি হয়।

বেশ কিছু দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৭ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের আন্দোলন স্থগিত করে প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দেয় বিমান সিবিএ। এই আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করছে বিমান শ্রমিক লীগ (সিবিএ)।

চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কোনো ওভারটাইম না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিমানের ২ হাজার ২০০ ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারী। সিবিএ-এর সঙ্গে বৈঠক করে আগামী মার্চের মধ্যে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করার আশ্বাস দেয় বিমান কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া কর্মস্থলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীদের চিকিৎসার খরচ বহনের দায়িত্বও নেয় বিমান।

বিগত ২৯ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে বিমান শ্রমিক লীগ সিবিএ সভাপতির মশিকুর রহমানের নেতৃত্বে ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিমান কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মোসাদ্দিক আহমেদ ছাড়াও বিমানের পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন ক্যাপ্টেন ফারহাত হোসেন জামিল, পরিচালক মার্কেটিং আলী আহসান বাবু উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিমান এমডি দুই মাসের সময় চাইলেও ৭ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের আন্দোলন স্থগিত করে সিবিএ।

বৈঠকে বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরে মার্চের মধ্যে ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করা হবে। চাকরি স্থায়ী না হওয়া পর্যন্ত কর্মস্থলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীদের চিকিৎসার খরচ বিমান বহন করবে। এ জন্য এক্সিডেন্টাল ফান্ড গঠন করা হবে।

স্থায়ী শ্রমিকের মতো ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীর লাশ পরিবহন ব্যবস্থা ও খরচ বিমান বহন করবে। সব ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীকে শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত সর্বশেষ) ধারা ১০৮ অনুযায়ী দ্বিগুণ হারে অতিরিক্ত কাজের (ওভারটাইম) ভাতা পরিশোধ এবং বীমার আওতায় আনা হবে। এ সুবিধা চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

এ প্রসঙ্গে বিমান শ্রমিক লীগ-সিবিএ সভাপতি মশিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আশা করছি কর্তৃপক্ষ ৭ মার্চের মধ্যে রূপরেখা প্রস্তুত করে ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের উদ্যোগ নেবে। শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত সর্বশেষ) ধারা ১০৮ অনুযায়ী দ্বিগুণ হারে অতিরিক্ত কাজের (ওভার টাইম) ভাতা পরিশোধ করার আদেশ জারি হয়েছে। এতে আমাদের আংশিক দাবি পূরণ হয়েছে।

তিনি জানান, আমরা ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণসহ বাকি দাবিগুলো নিয়ে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাব।

উল্লেখ্য, প্রায় ৩০ বছর ধরে বিমানে দৈনিক ভিত্তিতে কর্মরত ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। স্থায়ী শ্রমিকরা দুই ঈদে মূল বেতনের সমপরিমাণ বোনাস পেলেও ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের ফিক্সড দুই হাজার টাকা বোনাস দেয়া হয়। স্থায়ী শ্রমিকদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি ও পদন্নোতি হলেও এ সুবিধা পান না ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা। এদিকে স্থায়ী শ্রমিকরা কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হলে ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ভাতা, জীবন বীমা সুবিধা পেলেও ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা এসব সুবিধাবঞ্চিত।

এ ছাড়া অসুস্থতার জন্য কোনো ছুটি পান না তারা। অফিসে না এলে বেতন কাটা হয়। অন্যদিকে কর্মস্থলে আহত হলেও বিমান কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের সহযোগিতা দেয় না। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন পর শুধু শ্রম আইন-২০০৬ ধারা ১০৮ অনুযায়ী দ্বিগুণ হারে ওভারটাইম ভাতা পরিশোধ করার দাবি মেনে নিল বিমান কর্তৃপক্ষ।

আরএম/এমবিআর/এমএমজেড/আরআইপি

আরও পড়ুন