ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

মিল্কী হত্যাকাণ্ড : সিআইডির চিঠির জবাব দেয়নি র‌্যাব

প্রকাশিত: ০৮:১১ এএম, ২৩ জুলাই ২০১৫

চাঞ্চল্যকর যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার এক বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্ত সম্পন্ন ও চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এমনকি এ ঘটনায় অধিকতর তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্রও তাদের কাছে নেই। এছাড়া তদন্তে অগ্রগতির স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চেয়ে র‌্যাবের কাছে সিআইডির পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হলেও এর কোনো জবাব আসেনি। সিআইডি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
 
সূত্র জানায়, হত্যা মামলায় র‌্যাব তথ্য না দেয়ায় তদন্ত ব্যাহত হচ্ছে। তবে হত্যাকাণ্ডের অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ২/১ দিনের মধ্যে আবারো তাগিদ দিয়ে তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে।

২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড শপিং মলের সামনে যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর মিল্কীর ভাই মেজর রশিদুল হক খান বাদী হয়ে জাহিদ সিদ্দিকী, তারেক ওরফে কিলার তারেকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ঘটনার রাতেই র‌্যাবের হাতে আটক হন তারেক। এর দুইদিন পর তিনি র‌্যাব হেফাজতেই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ঘটনার পর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। তদন্ত শেষ করে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়।

তবে ওই সময় মামলার বাদী মেজর রশিদুল হক খান নারাজি দিলে আদালত ওই বছরের ৬ জুন মামলাটির পূনরায় তদন্তের জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দেয়।
 
সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তদন্তের দায়িত্ব পেলেও গুরুত্বপূর্ণ সব নথিপত্র তাদের কাছে নেই।এ কারণে চলতি বছরের ২৩ জুন র‌্যাব মহাপরিচালক বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে মিল্কীর ব্যবহৃত মোবাইলের সিজার লিস্ট, মামলার মূল আসামি ও হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া তারেকের মৃত্যুকালীন জবানবন্দীর তথ্য ও র‌্যাবের কাছে বাদীর মোবাইল জমা দেয়ার তথ্য চাওয়া হয়।
 
সিআইডির দাবি, মিল্কীর ব্যবহৃত মোবাইলফোনটি মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত। মোবাইলফোনটি মামলার বাদী নিজেই র‌্যাব-১ এর তৎকালীন অধিনায়ক কিসমত হায়াতের কাছে জমা দিয়েছেন। এছাড়া মামলার মূল অভিযুক্ত তারেক র‌্যাবের হেফাজতে থাকাকলীন বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। তার মৃত্যুকালীন জবানবন্দীর কোনো নথি সিআইডি পায়নি।

সিআইডির সূত্রের দাবি, আসামির মৃত্যুকালীন জবানবন্দী আদালতে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। ওই সময় আসামি সাধারণত মিথ্যা বলেন না। তারেকের মৃত্যুকালীন জবানবন্দীর নথি পাওয়া গেলে মামলার অধিকতর তদন্ত এগিয়ে নেয়া সহজ হবে।
 
সিআইডি সূত্রে আরো জানায়, র‌্যাবের দেয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে খুনিরা দুইটি পাজারো, একটি প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেলে করে মিল্কী হত্যা মিশন সম্পন্ন করেছে। ওই গাড়িগুলোর প্রকৃত মালিক কারা এই বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিআরটিএ-এর কাছে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তারা ইতিমধ্যে এ সংশ্লিষ্ট তথ্য সিআইডির কাছে হস্তান্তর করেছে।

মামলার বাদী মেজর রশিদুল হক খান জাগো নিউজকে বলেন, র‌্যাবের তদন্তে অনেক তথ্য উদঘাটিত হয়নি। মামলার চার্জশিটে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের নাম রাখেনি র‌্যাব। তাই এ মামলায় নারাজি দিয়েছিলাম।

তিনি আরো বলেন, যারা হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছে তারা জামিনে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সিআইডির নতুন করে তদন্ত শুরুর এক বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তদন্ত ও চার্জশিট হয়নি। ফলে হত্যাকারীদের বিচার নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
 
র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর দায়ের করা মামলার এজহারের সাত আসামিকে বাদ দিয়ে ১১ জনকে অভিযুক্ত করে এক বছর আগে চার্জশিট দেয়া হয়েছিল।পরে নতুন করে আরো আটজনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে পাঁচজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উত্তরা ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার দাশ জাগো নিউজ বলেন, বিআরটিএ চিঠির জাবাব দিলেও র‌্যাব এখনো দেয়নি। এজন্য ২/১ দিনের মধ্যে একটি ‘তাগিদ চিঠি’ দিয়ে র্যা বের কাছে তথ্য চাওয়া হবে। এছাড়া বিআরটিএর দেয়া তথ্য ঠিক আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই চলছে।

তিনি আরো বলেন, মূল আসামিদের সনাক্ত করে একটি গ্রহণযোগ্য তদন্ত সম্পন্ন করার জন্য সিআইডি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সহযোগিতা পেলে খুব দ্রুত তদন্ত শেষে চার্জশিট দখিল করা হবে।

জেইউ/এসআইএস/বিএ