ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভাষার ব্যবহার ভুলে গেলে চলবে না : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একুশ আমাদের জন্য বিরাট গর্বের। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। কাজেই এ ভাষার ব্যবহার ও চর্চা ভুলে গেলে চলবে না। বাঙালি হিসেবে সব ঐতিহ্য আমাদের ধারণ করতে হবে। চর্চা করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৮ উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ৪ দিনের কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দেশের অধিকতর উন্নয়ন এবং বিশ্বে জাতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বাংলা ভাষার যথাযথ চর্চা, ব্যবহার এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, একুশের পথ ধরেই এ দেশে স্বাধীনতা এসেছে। একটা জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার ভাষার ওপর, সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়। সেই ষড়যন্ত্রটা পাকিস্তানি শাসকেরা আমাদের ওপর করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শিগগিরই উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাবে। উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য যত রকমের শর্ত রয়েছে, তার সবাই বাংলাদেশ পূর্ণ করেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থানটাকে উন্নত করতে পারবো। সেই পর্যায়ে এসে গেছি। ইনশাআল্লাহ সেই ঘোষণা আপনারা শিগগিরই পাবেন।

তিনি বলেন, আমাদের এখন একটি সুযোগ এসে গেছে। যে কয়টি ক্যাটাগরিতে অর্জন থাকলে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেতে পারি, তার প্রতিটি শর্তই বাংলাদেশ এখন পূর্ণ করেছে। কাজেই আমাদের মর্যাদাটা আরও এক ধাপ ওপরে এগিয়ে নিতে পারবো।

শ্রীলঙ্কায় এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের কিছু কিছু চিত্র দেখেছি। এজন্য সত্যিই আমরা আনন্দিত। জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত সব দেশে যেন এ দিবসটি পালিত হয়, আমরা এর জন্য তথ্য সব জায়গায় পাঠিয়েছি। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকেও প্রতিবছর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তাহলে সবাই বিষয়টি জানতে পারবে।

পাকিস্তান সরকারের সময় বাংলা ভাষা ব্যবহারে বিভিন্ন বিধিনিষেধের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাভাষা নিয়ে অনেক যন্ত্রণা আমাদের সইতে হয়েছে। এখানে অনেকেই সে কথা বলতে পারবেন না। ভুক্তভোগী হিসেবে আমাদের বিষয়টি মনে আছে। একসময় আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হলো বাংলা অক্ষরে বাংলাভাষা লেখা যাবে না। আরবি হরফে বাংলা লিখতে হবে, এ দাবির প্রতিবাদ করলো বাঙালিরা। তারপর বলা হলো, রোমান হরফে বাংলা লিখতে হবে। এরও প্রতিবাদ হলো। তারপর এলো রবীন্দ্রনাথ পড়া যাবে না। তিনি হিন্দু। এ জন্য তার লেখা পড়লে আমাদের মুসলমানিত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের লেখাগুলোকে মুসলমানি ভাষা দেওয়া হবে। তার ‘মহাশ্মশান’ হয়ে গেলো ‘গোরস্থান’। ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি’কে পরিবর্তন করা হলো। লেখা হলো, ‘ফজরে উঠিয়া আমি দেলে দেলে বলি।’ আমাদের ছাত্রজীবনে কত রকমের যন্ত্রণা ভোগ করেছি, তা আপনারা বুঝতেই পারছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়। সে নির্বাচনে নৌকার জয় হয়। পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রের কারণে সে নির্বাচন বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। আবার ১৯৫৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন না করলে পাকিস্তান শাসনতন্ত্রে বাংলা ভাষা মর্যাদা পেতো না। তখন ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ঘোষণা করে। শহীদ মিনার গঠন করে। এজন্য বাজেটও করা হয়। তবে আইয়ুব খান সামরিক শাসন দেওয়ার পর সেটা তখন এগোয়নি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

এফএইচএস/এআরএস/জেআইএম

আরও পড়ুন