ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

রাজধানীতে হঠাৎ ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ

প্রকাশিত: ০৭:৪৮ এএম, ২২ জুলাই ২০১৫

রাজধানীতে হঠাৎ ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন প্রজাতির মশার উপদ্রব মারাত্মক আকারে বেড়ে গেছে। গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬১ জন রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। জুন মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ২৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনজন ও বারডেম হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু জ্বরের রোগী ভর্তি হয়েছেন। রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে সুপরিচিত ধানমন্ডি, কলাবাগান, গুলশান, বনানী, রমনা ও ইস্কাটন এলাকার বাসিন্দারাই ডেঙ্গু জ্বরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে!

এসব এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, গত কয়েকদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় হঠাৎ করেই মশার প্রকোপ মারাত্মক আকারে বেড়ে গেছে। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ছে। মশার কামড়ে অনেকের রাতের ঘুম হারাম হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

তারা অভিযোগ করেন মশার উপদ্রব বাড়লেও উত্তর বা দক্ষিণ কোনো সিটি কর্পোরেশনে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম তেমন চোখে পড়ছে না। প্রতি বছর ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগে ডিসিসির পক্ষ থেকে নাগরিক কমিটির মাধ্যমে জনসচেতনতা কার্যক্রম শুরু হলেও এ বছর তা এখনো শুরু হয়নি।

মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুন-জুলাই মাসে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বাড়ে।  

থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। জমে থাকা বৃষ্টির পানি থাকলে ডেঙ্গু মশার প্রজনন বাড়ে। তাই বাড়ি বা বাড়ির আঙিনার কোথাও যেন পরিষ্কার পানি জমে না থাকে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. আয়েশা বেগম বুধবার সকালে জাগো নিউজকে জানান, তারা বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে টেলিফোনে যোগাযোগ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত জ্বরের রোগীর তথ্য সংগ্রহ করছেন।

গত ১ জুন থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৭৬ জন ডেঙ্গু জ্বরের রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে জুন মাসে ১৫ জন ও জুলাই মাসে ৬১ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ভর্তিকৃত মোট ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর মধ্যে হলিফ্যামিলি হাসপাতালে চারজন, বারডেমে চারজন, বাংলাদেশ মেডিকেলে ১১ জন, ইবনে সিনায় ১৯ জন, স্কয়ারে দুইজন, মনোয়ারাতে চারজন, ইউনাইটেডে ১০ জন, খিদমাহতে তিনজন ও অ্যাপোলে হাসপাতালে ১৯ জন ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তিকৃত মোট চারজনের মধ্যে তিনজন ইবনে সিনায় ও একজন বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন।

ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার আলী জানান, গত কিছুদিন যাবত মশার কামড়ে রাত ২/৩টার সময় ঘুম ভেঙে সারারাত বসে থাকতে হচ্ছে। বাচ্চারা মশার কামড়ে অস্থির হয়ে পড়াশুনার জন্য টেবিলে বই নিয়ে বসতে পারছে না। অথচ সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম চোখেও পড়ছে না।

মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্পর্কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে মশা প্রজননের পিক সিজন চলছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারণে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে মশা লার্ভা ছাড়ে। তাই মশার উপদ্রব বাড়ে।

তিনি বলেন, আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলাররা না থাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মশক নিধন কার্যক্রম চলতো। বর্তমানে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলাররা থাকায় তারা নিজেরাই মশক নিধন কার্যক্রম তদারকি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। হঠাৎ করে মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে বলে হয়তো অনেকেই মনে করছে মশন নিধনে কার্যকর কার্যক্রম চলছে না। এ অভিযোগ মোটেই সত্যি নয় বলে তিনি জোর দাবি করেন।  

এমইউ/বিএ/এমএস