বাসন্তী রঙে এসেছে ফাগুন
‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত।’ তাই যদি না হতো, তবে কেন এতো আয়োজন? বকুল তলায় কেন বাজবে বাঁশি?’ প্রকৃতিতে বসন্ত এসে গেছে। তাকে বরণ করে নিতে আগ্রহের একটুও কমতি নেই নগরবাসীর। তাই আজ মঙ্গলবার পয়লা ফাল্গুনে তরুণ প্রাণ মিলেছে প্রাণের উৎসবে।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও বসন্ত বরণের প্রধান উৎসব হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায়। ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় বসন্তবরণ উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হয় বসন্তের এ অনুষ্ঠান।
রাগ সুর, গান আর নৃত্যের তালে তালে বসন্তকে অভিবাদন জানায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। হলুদ শাড়ি, রঙিন পাঞ্জাবি আর ফুলের মালা পরে ফাগুনের প্রথম দিনকে স্বাগত জানান তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ। প্রকৃতির পাশপাশি ফাগুনের রঙ লেগেছে সবার মনে। বড়দের সঙ্গে শিশুরাও এসেছে উৎসবের রঙ মাখতে।
সকালে সারেঙ্গি বাদন ও শাস্ত্রীয় সংগীতে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এরপর একে একে পরিবেশন করা হয়, গান, আবৃত্তি ও নৃত্য। এতে সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বকুলতলা।
কোকিলের কুহুতান, দখিনা হাওয়া, ঝরা পাতার মর্মর শব্দ আর নানা রঙের স্নিগ্ধতা নাগরিক জীবনে বাসন্তী বার্তা। ইট-কাঠের ঘেরাটোপে পহেলা ফাল্গুন যেনো রঙের ছটা।
উপস্থিত ছিলেন একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত আবৃতিকার সৈয়দ হাসান ইমাম, আয়োজক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক শফি উদ্দীন আহমেদ, উৎসব কমিটির নাঈম হাসান সুজা ও মানজার হাসান সুইট প্রমুখ।
বসন্ত বরণে আসা নারী পুরুষ, আবাল বৃদ্ধাদের পোশাকেও ছিল বাসন্তী সাজ। পুরুষরা হলুদ পাঞ্জাবি বা ফতুয়া পরেছেন। নারীদের পরণে ছিল বাসন্তী রঙের হলুদ শাড়ি, আর নিজ খোঁপায় গুঁজেছেন হলুদ গাঁদা কিংবা লাল গোলাপ। কারও বা কপালে টিপের সঙ্গে মাথায় ছিল নানা রকমের ফুলে জড়ানো টায়রা। বকুলতলা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চষে বেড়াচ্ছেন তারা। টিএসসি, হাকিম চত্বর, লাইব্রেরি, অপরাজেয় বাংলা, বিজনেস ফ্যাকাল্টি, শ্যাডো, কার্জন, এনেক্স, শহীদ মিনারসহ পুরো এলাকায় বাসন্তী সাজে দেখা গেছে অধিকাংশকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলোতেও ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাসন্তী সাজে দেখা গেছে।
বসন্ত উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুলতলা, বাহাদুর শাহ পার্ক ও ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে একযোগে চলবে এ অনুষ্ঠান।
এমএইচ/এআরএস/এমএস