তিস্তা ব্যারেজে পর্যটকদের ভিড়
দেশের সর্ব বৃহৎ সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজে ঈদের প্রথম দিনেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে। নগর জীবনের ব্যস্ততা কাটিয়ে, শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে নাড়ীর টানে বাড়ি ফেরা মানুষগুলো যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। ঈদের নামাজ শেষে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় হাজারো দর্শনার্থীর উপস্থিতি যেন তাই বলে দিল।
পরিবার পরিজন নিয়ে ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিলো তিস্তা ব্যারেজ এলাকা। কচি-কাঁচা, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এ যেন সত্যিই এক মিলন মেলা।
পর্যটকদের বহনকারী বিভিন্ন সাজে সজ্জিত গাড়িগুলোতে শোভা পাচ্ছিলো জরি লাগানো নানা রংগের বর্ণিল কাগজ ও ‘চল না ঘুরে আসি কোথাও থেকে’ লেখা ব্যানার।
জেলা শহর, উপজেলা শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের নামে লেখা ব্যানার সংবলিত গাড়িগুলোতে পর্যটকদের মাইক বাজিয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ করতে দেখা গেছে। বাস, মাইক্রোবাস, নসিমন, করিমন, রিকশা, অটোরিকশা, মটোর সাইকেল আর পায়ে হাটা মানুষের ধীরলয়ে নির্বিঘ্নে গমনাগমন এ যেন অনিন্দ্য সুন্দর উপভোগ্য এক পরিবেশ।
বিনোদনের জন্য পালতোলা কয়েক ডজন নৌকা জনপ্রতি মাত্র ২০ টাকায় দর্শনার্থীদের নিয়ে তিস্তার বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে। এ ছাড়া ফুটবল নিয়ে ছোটাছুটি, রিং খেলা, চুড়ই ভাতি, মাঠে বসে আড্ডা, দলবেধে ছবি উঠানো, সামিয়ানা টেনে সারিবেধে খাবার খাওয়া আনন্দের মাত্রাকে আরো কয়েকগুন বাড়িয়ে দিলো।
ঠাকুরগাঁও থেকে বেড়াতে আসা আমিনুল হক জানান,‘ নামাজ শেষ করেই আমরা বন্ধুরা বাসে করে তিস্তা ব্যারেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছি। এখানে এসে ব্যারেজও দেখা হয়েছে আবার বন্ধুরা মিলে হৈ হুল্লর করে মজাও করেছি । জায়গাটি সত্যিই উপভোগ্য।’
লালমনিরহাট সদর থেকে আসা আইশা আক্তার বলেন, ‘আমি আব্বুর সঙ্গে এসেছি ব্যারেজ দেখার জন্য। খুব মজা পেয়েছি। দীর্ঘক্ষণ নৌকা ভ্রমণ করেছি।’
গার্মেন্টস কর্মী সাফিয়া খাতুন জানান, ‘ঢাকায় থাকি কখনো কখনো দম বন্ধ হয়ে আসে। প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে অনেক আনন্দ পাই’।
এ সময় বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানান। তারা বলেন, এই এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুললে সরকার যেমন রাজস্ব পাবে তেমনি সুস্থ ও সুন্দর বিনোদনের স্থান হিসেবে গড়ে উঠবে জায়গাটি।
রবিউল হাসান/এসকেডি/পিআর