‘অভিনেতা আর অইতে পারলাম না’
মাত্র ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের ভিডিও। তাতেই যেন হাসতে হাসতে খিল লেগে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, হাসির বাণে বিদ্ধ সবাই। লুটে পড়ছে ক্ষণে ক্ষণে। দম বন্ধ করা হাসিতে একজন আরেকজনের গায়ের ওপর গিয়ে পড়ছেন। হাসছেন মঞ্চের অন্য অতিথিরাও।
এমন হাসির বন্যা বইয়ে দিয়ে তিনি ঠিক স্থির। তবে মুচকি হাসি তিনিও হাসছেন। বক্তৃতা করছেন, রসে ঠাসা একেবারে আঞ্চলিক ভাষায়। কোনোই জড়তা নেই। নেই আড়ষ্টতা।
মঞ্চে উঠেই রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ স্বভাবসুলভ কথার মধ্য দিয়ে আলোচনা শুরু করেন সেদিন।
ঘটনা গত ১০ জানুয়ারির। রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে একটি চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ওই ভিডিও এখন ভাইরাল।
ভিডিওটির খণ্ডাংশ থেকে জাগো নিউজের পাঠকের জন্য রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের হুবহু অনুলিপিকারে তুলে ধরা হলো-
‘ইয়ুথ বাংলা অনুষ্ঠানে না এসে তো পারি না। নইলে তো নিজেকে ধরেই নিতে অইবে যে, আমি ইয়ুথের বাইরে চলে গেছি। আসাদুজ্জামান নূর এবং আমি ১৯৬১ সালে একই সঙ্গে মেট্রিক পাস করেছি। জানি না, কারে বেশি বুড়া দেহা যায়। কিন্তু বিষয়ডা অইলো উনি এই চেহারা নিয়াও ভালো অভিনয় করতাছে। আর তার চেয়ে আমার চেহারাডা খারাপ না। তো অভিনেতা আর অইতে পারলাম না।
যাও নেতাগিরি করতাম, এহন আমারে রাজনীতি থেকে আউট কইরা দিছে। নো মোর ইন পলিটিক্স। রাজনীতি থেকে বিতাড়িত আমি।
শুনলাম, ইয়ুথ বাংলার অনুষ্ঠান। সুন্দর সুন্দর যুবক আর যুবতীর সমাহার হবে। এটা দেখার লোভ সংবরণ খুব কঠিন। এটা আমারে আকৃষ্ট করেছে এখানে আসার জন্য। এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। মনের কথা সবাই মনের মধ্যে রাখে। কেউ সাহস কইরা বলে না। আমার লজ্জা-শরম একটু কম। যার জন্য প্রায় বলেই ফেলি, এই আর কি।
তারিন আর সুইটি ছিল আমারে রিসিভ করার সময়। আমারে কইলো, কেমন আছেন? কইলাম, যা ছিলাম, এখন মোটামুটি ভালোই আছি। তাদেরকে দেহার পর তো ভালো না থাইকা উপায় নাই।
আর এসব অনুষ্ঠানে আইসা আরেকটা জিনিস খুব বেখাপ্পা লাগে। মঞ্চের মধ্যে লাইট থাহে বেশি। অডিয়েন্স আর দেহা যায় না। আইজকা দরকার ছিল মঞ্চে লাইট কম, অডিয়েন্সের মধ্যে লাইট বেশি। তালে অডিয়েন্সকে সুন্দরে কইরা দেহা যাইতো। উপভোগ করা যাইতো।
এদিন মূল আলোচনায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতির অগ্রযাত্রাকে বেগবান ও টেকসই করতে অবদান রাখার জন্য সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরাম (ওআইবিসিএফ) ওই অনুষ্ঠানে আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিশিষ্ট শিল্পী হাশেম খান, ওআইবিসিএফ-এর সভাপতি সুফী ফারুক ইবনে আবু বকর, উপদেষ্টা মো. আরাফাত এবং শাহ আজিজুল হক বক্তব্য রাখেন।
এএসএস/বিএ