ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ফারমার্স ব্যাংক জলবায়ু ট্রাস্টের টাকা ফেরত না দেয়ায় উত্তপ্ত সংসদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:০২ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, জলবায়ু ট্রাস্টের ৫০৮ কোটি টাকা নিয়েও দি ফারমার্স ব্যাংক ফেরত দিতে না পারায় এবং দেশের অধিকাংশ ব্যাংক নিয়ম না মেনে প্রচুর পরিমাণ ঋণ দিয়ে আদায় করতে না পেরে দেউলিয়াপনা অবস্থায় এসেছে, জনগণের অর্থ লুটপাট করেছে।

বিশেষ করে বেক্সিমকো গ্রুপকে খেলাপিঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে এ বিষয়ে এবং দেশের ৪৮টি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা কী- তা জানাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিবৃতি দাবি করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এসব কথা বলেন তিনি। এরপর বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির আরেক এমপি ফকরুল ইমাম। আর এসবের জবাব দেন শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এসময় তাদের যুক্তিতর্কে সংসদ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, দেশের ব্যাংকগুলো তারল্য সঙ্কটে ভুগছে। অধিকাংশ ব্যাংকের প্রচুর পরিমাণ অর্থ অনাদায় থাকায় (ঋণ খেলাপির) কারণে দেউলিয়া দশায় পড়েছে, তারা জনগণের অর্থ লুটপাট করেছে। তারা টাকা দিয়ে তুলতে পারছে না। এর ফলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দি ফারমার্স ব্যাংক জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ৫০৮ কোট টাকা নিয়ে ফেরত দিতে পারছে না। অধিকাংশ ব্যাংক জনগণের অর্থ নিয়ে আর দিতে পারছে না। এর দায় দায়িত্ব কে নেবে?

এ জন্য অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যাংক প্রচুর টাকা বিভিন্ন সংস্থা বা কোম্পানিকে ঋণ হিসেবে দিয়ে আর আদায় করতে পারছে না। এখন তারা শুধু সুদটুকু দিতে পার্টিকে অনুরোধ করছে। কেননা, তারা ঋণ রিসিডিউল করতে চায়। এখন জনগণের অর্থ আর ব্যাংকে সুরক্ষিত নয়। তারা জনগণের অর্থও ফেরত দিতে পারছে না। এ যদি ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থা হয় তা হলে আমরা জিডিপি (গ্রোথ) ৭.২ কীভাবে অর্জন করবো?

জাতীয় পার্টির এ এমপি বলেন, আজকে যারা ঋণখেলাপি তারা বহু তাগাদা সত্ত্বেও টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এমনকি সুদও দিচ্ছে না। এখন রিসিডিউল করে কোনোমতে ব্যাংকগুলো তাদের রিপোর্ট ভালো দেখাতে চাইছে। এই নিয়ম ভেঙে ঋণ দেয়ার সঙ্গে ব্যাংকের এমডিসহ অনেকই জড়িত। এভাবে ব্যাংকের অর্থ লুটপাট হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন কোম্পানি হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। কিন্তু দিচ্ছে না। আদায় হচ্ছে না।

বেক্সিমকোসহ কয়েকটি ঋণখেলানি কোম্পানির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের এসব বড় বড় কোম্পানির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে? দেশের ৪৮টি ব্যাংকের কোনটির কী অবস্থা তা আমরা জানতে চাই।

তিনি বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রী আমরা কি ডুবন্ত নৌকায় নাকি ভাসন্ত নৌকায় তা জানা প্রয়োজন। আমি এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বিবৃতি দাবি করছি।

এরপরে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি ফকরুল ইমাম বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আটকে দিয়েছে। ‘ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্প চলমান ছিল যা ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক তিন হাজার ৫০০ কোটি দিয়েছিল। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর দেখা যায় মাত্র ১১ কোটি টাকা বেঁচে গেছে। যা বিশ্বব্যাংকে ফেরত দেয়ার কথা। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণণালয় মাত্র ১১ কোটি উদ্বৃত্ত টাকা ফেরত না দেয়ায় বিশ্বব্যাংক সব টাকা অর্থাৎ তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড় বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে যদি চলে তবে ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাংক তাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থ দেয়া বন্ধ করে দেবে। এ বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

এর উত্তর দিতে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও দেউলিয়াপনার বিষয়ে আমরা বসে নেই, সরকার তৎপর রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের আরও যত্মবান হতে হবে। কেননা, ব্যাংকিং খাত উন্নয়নের শরিক। এ বিষয়ে আমাদের অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, ব্যাংক লুটপাটের বিষয়টি এর আগেও হয়েছে। আমাদের সরকার এ বিষয়ে আরও সতর্ক হয়েছে। এর ফলে আমাদের উন্নয়ন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না।

এইচএস/বিএ

আরও পড়ুন