বছরে এক হাজার কোটি টাকার বাজেট চায় পুলিশ
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পুলিশের জন্য বাজেট ব্যয় নয় বিনিয়োগ হিসেবেই ধরা হয়’ এ কথা উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, আমাদের উন্নয়নের জন্য প্রতি বছর বাজেট দেয়া হয় ৪০০ কোটি টাকা। এই কাজ করতে গিয়ে কখনো সময় শেষ হয়ে যায়। কখনো কাজ থেকে যায় বাজেট ঘাটতির কারণে। শুরু করেও শেষ করা সম্ভব হয় না। উন্নয়ন কাজের জন্য যদি এক হাজার কোটি টাকা বাজেট দেয়া হয় তাহলে আমাদের প্রজেক্টগুলো সব সম্পন্ন করা যাবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের অডিটরিয়ামে ‘মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ঊধ্র্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সচিবদের মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই দাবি জানান।
এজন্য পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেলে পুলিশের কর্মতৎপরতা আরও বোগবান হবে। নির্মাণ খাত ও ক্রয়খাতে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড, কাজের টেন্ডারে দ্রুত ছাড়পত্র ও অনুমোদন, দ্রত বাজেটের অর্থ ছাড়ে অনুরোধ জানান তিনি।
আইজিপি বলেন, রাজধানীর ৪৯ থানার ১৫টিই ভাড়া বাসায়। আমরা চেয়েও জায়গা পাচ্ছি না। গণপূর্ত বিভাগে অনেক কাজ থাকে। আমাদের অনেক কাজ পার করে দিয়েছেন সহজেই। আশা করছি পুলিশ রিলেটেড প্রজেক্টগুলো যদি তরিৎ গতিতে সম্পন্ন করা যায় তাহলে সুবিধা হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট হচ্ছে। এ কারণেই জায়গা প্রয়োজন। ভূমিমন্ত্রী অনেক উদার তিনি বিভিন্ন সময়ে আমাদের অনেক সহযোগিতা করে থাকেন। আমাদের যেসব প্রজেক্ট থাকে সেখানে আমাদের কর্মকর্তারা তার খোঁজ-খবর নিয়ে থাকেন।
‘আমরা নিজেদের জন্য কিছু চাই না। বাহিনীর সক্ষমতার জন্য চাই। পুলিশের সক্ষমতা এই সরকারের গত ৯ বছরে অনেক বেড়েছে। আগামী বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা লাগবে। আমরা সহায়তা পাই। আগামীতে যাতে পুলিশের ক্যাপাবিলিটি, ক্যাপাসিটি বাড়ানো যায়, সে জন্য সকলের সহযোগিতা চাই। আমাদের সরকার প্রধান যখন আমাদের কাজের মূল্যায়ন করে তখন আমরা দ্বিগুন উৎসাহ নিয়ে কাজ করে থাকি’-বলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।
এ কে এম শহীদুল হক বলেন, পুলিশের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তাদের বেতনের দিকে দিয়ে গ্রেড-১-এ পাঁচটি পদ দিতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দেয়া হয়েছে দুটি। আর গ্রেড-২-তে চাওয়া হয়েছিল ১০টি পদ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাতটি দেয়ার জন্য অনুমোদন দেয়। কিন্তু পাস হয়েছে মাত্র একটি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দাবি করা গ্রেড-১-এ পদ ৫টি ও গ্রেড-২-তে ১০টি পদ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
জঙ্গিবাদ দমন সম্পর্কে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটার প্রভাব বাংলাদেশেও ছিল। গত বছরে হলি আর্টিসানে হামলার মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছিল। তারা বেহেশতে যাওয়ার দোহাই দিয়েই যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করেছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা একটির পর একটি জঙ্গি আস্তানা খুঁজে বের করেছে। ৫৭ জন আত্মঘাতি জঙ্গি সদস্য পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছে। তারা মুক্তমনা ব্লগারদের হত্যা করেছিল। আমরা তাও বন্ধ করেছি। এ কারণে বহির্বিশ্বও আমাদের প্রশংসা করেছে। ইন্টারপোল আমাদের দুজন সদস্য নিয়েছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, গত বছরের তুলনায় দেশে বিভিন্ন প্রকার অপরাধ কমেছে। পুলিশের পেশাদারিত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চার বছরে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় বিভিন্ন প্রকার আন্তর্জাতিক সম্মেলনও হচ্ছে দেশে, তাতে বিভিন্ন দেশের স্পিকার, সংসদ সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জাম খান কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, আইন বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক।
জেইউ/জেডএ/বিএ