‘পুলিশে ধরলে আঠারো ঘা’ মিথ্যা প্রমাণ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ বলে ‘বাঘে ধরলে এক ঘা, আর পুলিশে ধরলে আঠারো ঘা’ -এ প্রবাদ যেন ভুল হয়। পুলিশ মানুষের আস্থা। সেই জায়গাটা পুলিশকে অর্জন করে নিতে হবে। যদিও ইতোমধ্যে পুলিশ সদস্যরা সেই আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) পুলিশ স্টাফ কলেজের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (আইসিসি) পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে রাখা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পুলিশের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের অবদান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে পুলিশের মাত্র দুই সেট পোশাক ছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে ৩ সেট পোশাকের ব্যবস্থা করেছি। গতকাল (সোমবার) রাজারবাগে পুলিশ সদস্যদের প্যারেড দেখলাম। তীব্র শীতের মধ্যেও সবাই হাফহাতা শার্ট পড়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের গায়ে সোয়েটার ছিল না। যদিও প্যারেডে পুলিশের ড্রেস কোডে সোয়েটার নেই।
তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতনদের বলেছি, তাদের জন্য একটি হাতাকাটা সোয়েটারের ব্যবস্থা করা যায় কিনা। সেটা না হয় তারা শার্টের ভেতরেই পড়লো। এ ছাড়াও আপনাদের (পুলিশ) ডিউটি পালনে সহায়তার জন্য থানার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইউনিটে ভাগ করে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি দমনে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খেলেও বাংলাদেশ পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে তা দমন করছে। ভবিষ্যতেও সবার গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সফলতা আসবেই।
মাদক নির্মূলের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদকের কারণে অনেক পরিবার বিপদে পড়ছে, পরিবারগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমাদের মেধাবী তরুণরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। জঙ্গিবাদ দমনের দক্ষতা ও আন্তরিকতা নিয়ে এবার মাদকের বিরুদ্ধে আপনাদের লড়াইয়ে নামতে হবে। মাদক নির্মূলের কাজই হোক আপনাদের প্রধান লক্ষ্য।
পুলিশের সুযোগ-সুবিধা ও বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, আপনাদের (পুলিশ) কষ্টগুলো নিজে দেখি, বাস্তবায়নের পথ খুঁজি। বিভিন্ন চাওয়া জনপ্রশাসনে পাঠাই। সেখান থেকে অর্থে (অর্থ মন্ত্রণালয়) গিয়ে ঠেকে যায়। তারপরেও বলতে হয়, আমরা পুলিশের বেতন যে হারে বাড়িয়েছি পৃথিবীতে কোনো দেশের সরকার এতো বৃদ্ধি করতে পারবে কি না সন্দেহ আছে।
দেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পুলিশের নিরাপত্তার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সুষ্ঠুভাবে আইপিইউ এবং সিপিইউ সম্মেলনে নিরাপত্তা দিয়েছে। সম্মেলন শুরুর আগে সবার চিন্তা ছিল কী জানি ঘটে। কিন্তু আপনারা যে নিরাপত্তা দিয়েছেন তা সবার ধারণা পাল্টে দিয়েছে।
বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা এবং কক্সবাজারে যাওয়া ভিআইপি ও ভিভিআইপিদের সুষ্ঠুভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।
গতকাল সোমবার (৮ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮। ‘জঙ্গি, মাদকের প্রতিকার বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’ স্লোগানে পাঁচ দিনব্যাপী এ সপ্তাহ শেষ হবে আগামী ১২ জানুয়ারি। আজ (মঙ্গলবার) পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে পুলিশের আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এআর/আরএস/পিআর