মহিপালে ৬ লেন ফ্লাইওভার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফেনীর মহিপালে দেশের প্রথম ও একমাত্র ছয় লেন ফ্লাইওভার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই ফ্লাইওভার উদ্বোধনের ফলে ফেনী হয়ে ঢাকা, কুমিল্লা, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, পার্বত্য তিন জেলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট অঞ্চলে যাতায়াতকারী বিভিন্ন যানবাহন নিয়মিত যানজটের কবল থেকে মুক্তি পাবে, স্বস্তি পাবেন যাত্রীরাও।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহিপাল এলাকাটি যাত্রীদের জন্য দুঃখের এলাকা ছিল। এখানে সব সময় যানজট লেগেই থাকতো। আজ থেকে যাত্রীদের সেই দুঃখের অবসান হলো। যাত্রীরা এখন থেকে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্যস্থলে যাতায়াত করতে পারবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ যেন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করতে পারে সেজন্য সরকার সব ব্যবস্থা করছে।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন কুমিল্লা জোনের বাস্তবায়নাধীন দেশের প্রথম ছয় লেন ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে প্রকল্পের পরিচিতি তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই এলাকার স্থানীয় লোকজন যাতে আলাদাভাবে যাতায়াত করতে পারে সে ব্যবস্থাও নেয়া হযেছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি নিদিষ্ট মেয়াদের ৬ মাস আগেই সমাপ্ত হওয়ায় তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকসহ সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে যাত্রী বাড়ছে, যানবাহন বাড়ছে, গাড়িও বাড়ছে। ভবিষ্যতেও বাড়বে। এটা মাথায় রেখেই আমরা এ ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছি। এ ফ্লাইওভারকে ঘিরে মানুষের দ্রুত যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে। মানষের সুদিন ফিরবে। এছাড়া দুর্ঘটনাও কমে যাবে। অতীতে এই এলাকাটিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটতো।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করা হবে। এ সময়ে তার সোনার বাংলার স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি। আর ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত সমদ্ধৃ দেশ, সেলক্ষ্য নিয়ে কাজ আমরা করছি। আশা করি আমরা সফল হবো।
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, মহিপাাল ফ্লাইওভার ছয় লেনের হলেও সেতুর নিচের দুই পাশে আরও চারটি সার্ভিস লেন চালু থাকবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট মহিপালে ১০ লেন সেতুই হচ্ছে। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ১৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন বিভাগ ও মেসার্স আবদুল মোনেম লিমিটড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ফ্লাইওভারের মূল দৈর্ঘ্য ৬৬০ মিটার, প্রস্থ ২৪ দশমিক ৬২ মিটার, সার্ভিস রোডের দৈর্ঘ্য এক হাজার ৩৭০ মিটার, সার্ভিস রোডের প্রস্থ ৭ দশমিক ৫ মিটার, সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৬০ মিটার, ১১টি স্প্যান, ফুটপাথের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ২১০ মিটার, পিসি গার্ডার ১৩২টি।
এফএইচএস /এমবিআর/আইআই