আমার কিছু হারানোর নেই : শিক্ষামন্ত্রী
‘আমার কিছু হারানোর নেই। নতুন করে কিছু পাওয়ারও নেই। আমি বিনয়ী কিন্তু নীতিগত দিক থেকে অবিচল। কেউ যদি এ বিষয়গুলোকে অসহায়ত্ব মনে করেন, তবে তা অন্যায়। অথচ আমার বক্তব্য খণ্ডিত করে জনমনে বিভ্রান্ত ছাড়ানো হচ্ছে।’ বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ঘুষ-দুর্নীতিতে ছিল আকণ্ঠ নিমজ্জিত। সেই সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্কুল-কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছে ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় করার সময় বলত -এর ভাগ উপরেরও দিতে হয়। শিক্ষক-কর্মচারীরা বাধ্য হয়েই ঘুষ দিতেন। অফিসাররাই খায় না, ঊর্ধ্বতন আমলারাও পায়, এমনকি মন্ত্রী হিসেবে আমিও পাই। স্বাভাবিকভাবেই ঘুষ প্রদানকারীরা মনে করতো শুধু অফিসাররা চোর নয়, মন্ত্রীও চোর। সেটি বোঝাতে আমি এমন কথা বলেছি।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে শিক্ষা খাতের দুর্নীতি বিশ্বের তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক অঙ্গসংগঠন দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে। ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত আছে এবং থাকবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে আমি শ্রদ্ধাপূর্ণ ব্যবহার করে থাকি তাই কেউ কেউ আমার অসহায়ত্বের কথা বলে থাকেন। আমি মানুষের সঙ্গে অত্যন্ত নমনীয় হলেও নীতি আদর্শ ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দৃঢ ও কঠোর। দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে আমি অবিচল।
‘ঘুষ আদায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহের বক্তব্যে’ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করার বিষয়ে তিনি বলেন, টিআইবি তাদের কাজ করেছে। আমি কারো বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা দোষী করতে রাজি নয়।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘আজ আমি কোনো প্রশ্নের উত্তর দেব না। আমার বক্তব্য আমি তুলে ধরেছি। এর বাইরে আর কিছু নাই।’ এরপর তিনি সংবাদ সম্মেলন থেকে চলে যান।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে ‘খালি অফিসাররা চোর না’, ‘সহনশীল হয়ে ঘুষ খাবেন’ এবং ‘সহনশীল মাত্রায় ঘুষ খাওয়ার পরামর্শ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত এসব সংবাদের প্রসঙ্গে আজ শিক্ষামন্ত্রী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
এমএইচএম/আরএস/পিআর