শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিন, প্রধানমন্ত্রীকে কাদের সিদ্দিকী
প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণের দাবি ন্যায্য, এ দাবি মেনে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম)।
রোববার বেতন বৈষম্য নিরসনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে একাত্মতা প্রকাশ করে এমন বক্তব্য দিয়েছেন কাদের সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, ‘যদি জানতাম শিক্ষকদের শহীদ মিনারে এসে অনশন করতে হবে তবে আমি মুক্তিযুদ্ধ করতাম না। মানুষ গড়ার কারিগরদের রাস্তায় নামতে হয়, শহীদ মিনারে রাত কাটাতে হয়, অনশন করতে হয়- এটা একটি সভ্য দেশের জন্য লজ্জার।’
‘আপনাদের (সহকারী শিক্ষক) প্রতি যে বৈষম্য হয়েছে তা সমর্থন করতে পারি না। এ দুর্মূল্যের বাজারে শিক্ষকদের সঙ্গে এ বৈষম্য চলতে পারে না। আপনারা জানেন বঙ্গবন্ধুর মেয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী, অনেক কথাই তিনি শুনতে চান না, শোনেনও না। অনেক সময় মাটিতে তার পা পড়ে না। তারপরও বলব, আমি তার কাছে প্রকাশ্যে অনুরোধ করছি- আপনি শিক্ষকদের অসুবিধা দেখুন, বিচার করুন তারপর ঠিক করুন।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষকদের শহীদ মিনারে অবস্থান, সঙ্গে সঙ্গে অনশন এটা আপনার (প্রধানমন্ত্রী) জন্য সম্মানের নয়। আপনি বিচার করুন, শিখুন, এদের দাবি কোনো মতেই অন্যায্য নয়। আজকে হয়তো চেষ্টা করতে পারেন এদের ভিতরে শত্রু ও দালাল ঢুকিয়ে দিয়ে আন্দোলন নষ্ট করতে পারেন। কিন্তু ভবিষ্যতে এদের আন্দোলন আপনার জন্য বুমেরাং হতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনি খুব সুখে নেই। আপনার আশপাশে যারা আছে তারা অপদার্থ, ব্যর্থ। আপনি শিক্ষকদের সম্মান করতে চেষ্টা করুন। শিক্ষকরাও আপনাকে সম্মান করবে। আপনার অফিসের কোনো পিওনের বেতন এমন নেই। যেটা শিক্ষকদের দেয়া হয়েছে।’
প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের বেতনের ব্যবধান ৫ টাকা হওয়ার দরকার জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে নিবেদন করছি, আপনি এদের দাবি মেনে নিন। যারা অনশনে আছেন, তাদের অনশন ভাঙার চেষ্টা করুন এখনই। আপনি আপনার লোক পাঠিয়ে দিন, অনশন ভাঙান এবং এদের দাবি মেনে নিন।’
‘এ বেতনে বাড়িতে কাজের লোকও পাওয়া যায় না। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের এত বৈষম্য হওয়ার কথা নয়। প্রধান শিক্ষকদের (মূল) বেতন ২৫ হাজার টাকা ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন ২৪ হাজার টাকা করুন। আমার কথা আজ না শুনলেও আগামী দিন শুনবেন।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘সময় থাকতে ন্যায় বিচার করুন। যখন সময় থাকবে না তখন ন্যায় বিচার তো দূরের কথা বিচার করারও সুযোগ পাবেন না।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবীর বলেন, ‘আপনারা সাহস হারাবেন না, অন্যায় করবেন না। শিক্ষক হয়ে অন্যায় করলে আপনাদের মুখ দেখানোর কোনো জায়গা থাকবে না। আমি মনে করি, আপনাদের দাবি যদি সঠিকভাবে উপস্থাপন করা যায় সারাদেশের মানুষের সমর্থন আপনারা পাবেন।’
প্রধান শিক্ষকদের এক গ্রেড নিচে বেতন নির্ধারণের দাবিতে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের উদ্যাগে গতকাল সকাল থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে।
আরএমএম/জেএইচ/আরআইপি