ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

১০ বছরে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে ভূমিষ্ঠ শিশুর সংখ্যা বেড়েছে ৬ গুণ

প্রকাশিত: ১০:৪৮ এএম, ১১ জুলাই ২০১৫

দেশে গত এক দশকে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ শিশুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ছয়গুণ! ২০০৪ সালে এ হার শতকরা মাত্র চার ভাগ থাকলেও ২০১৪ সালে সেটি শতকরা ২৩ ভাগে উন্নীত হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস)-২০১৪ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামের তুলনায় শহুরে নারীদের দ্বিগুণ সংখ্যক সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান ভূমিষ্ঠ হচ্ছে। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যত সংখ্যক মা সন্তান প্রসব করেন তার অর্ধেকই মাধ্যমিক, উচ্চ শিক্ষিত ও ধনী শ্রেণির নারী।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে কোনো দেশের মোট জন্মগ্রহণকারী শিশুর মধ্যে শতকরা ১০ ভাগ থেকে ১৫ ভাগের বেশি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হওয়া মোটেও কাম্য নয়।

তারা বলছেন, সাধারণ নিয়মে যে সকল ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব মোটেই সম্ভব হয় না, গর্ভবতী মা প্রসবকালীন জটিলতায় ভোগেন কিংবা স্বাভাবিক প্রসবের জন্য সময়ক্ষেপণে মা ও গর্ভজাত শিশু দু’জনেরই মৃত্যুঝুঁকি থাকে শুধুমাত্র সে সব ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র চিকিৎসকরা সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

জানা গেছে, বর্তমানে শতকরা মাত্র ৩৭ ভাগ গর্ভবতী নারীর সন্তান প্রসব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে হয়ে থাকে। হাসপাতালে মোট সন্তান প্রসবের শতকরা ১৫ ভাগ সরকারি সেবা কেন্দ্রে ও ২২ ভাগ বেসরকারি হাসপাতালে হয়ে থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসকরা এখন আর স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করেন না। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা সময় ও যেকোনো ধরনের ঝুঁকি এড়াতে মায়েদের সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করে থাকেন।

আবার বেসরকারি হাসাপাতাল ও ক্লিনিকের চিকিৎসকরা মোটা অংকের বিল আদায়ের জন্য গর্ভবতী মা ও তাদের অভিভাবকদের নরমাল ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করলে মা ও সন্তানের ক্ষতি এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও হতে পারে বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অবস্ট্রেটিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসি বেগম বলেন, সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের জন্য শুধুমাত্র চিকিৎসকরাই দায়ী নন। শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের অনেক নারীই স্বাভাবিক ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করতে রাজি হন না। চিকিৎসককে দ্রুত সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে বাধ্য করেন।

বিডিএইচএস-২০১৪ অনুসারে গ্রামে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের হার শতকরা মাত্র ১৮ ভাগ হলেও শহরে এ হার শতকরা ৩৮ ভাগ।



বিডিএইচএস-২০১৪ অনুসারে ২০০৪ সালে সিজারিয়ানের অস্ত্রোপচারের হার ছিল চার ভাগ। ক্রমানুসারে ২০০৭ সালে ৯ ভাগ, ২০১১ সালে ১৭ ভাগ ও সর্বশেষ বিডিএইচএস -২০১৪ এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে শতকরা ২৩ ভাগে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত ‘ দি গ্লোবাল নাম্বার অ্যান্ড কস্ট অব অ্যাডিশনালি নিডেড অ্যান্ড আননেসেসারি সিজারিয়ান সেকশনস পারফর্মড পার ইয়ার: ওভারইউজ অ্যাজ এ ব্যারিয়ার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয় ১৩৭টি দেশের ভূমিষ্ঠ শিশুর জন্মগ্রহণ জরিপে দেখা গেছে ৫৪টি দেশে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের হার শতকরা ১০ ভাগের নিচে।

৬৯টি দেশে শতকরা ১৫ ভাগের বেশি এবং ১৪টি দেশে এ হার শতকরা ১০ ভাগ থেকে ১৪ ভাগ। এসব দেশে ৬২ লাখ সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার অপ্রয়োজনীয় চিল। অতিরিক্ত সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের ফলে দুই দশমিক ৩২ বিলিয়ন অর্থ ব্যয় হয়।

এমইউ/বিএ/আরআই