কুচকাওয়াজ না দেখেই ফিরতে হলো তাদের
তেজগাঁওয়ে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজ দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন জড়ো হলেও তাদের অনেকেই কুচকাওয়াজ দেখতে পারেননি। হাজার হাজার মানুষ পুরনো বিমানবন্দর এলাকার প্যারেড স্কয়ারে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে গেছেন।
বনানী থেকে দুই তরুণ বন্ধু শামীম ও মাহফুজ এসেছেন কুচকাওয়াজ দেখতে। ভেতরে ঢুকতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের উল্টো দিকে ১৪ নম্বর গেটের সামনে রোদ বাঁচিয়ে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছেন দু’জন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শামীম বলেন, ‘খুব ইচ্ছে ছিল কুচকাওয়াজ দেখব। সকাল ৮টার মধ্যেই চলে এসেছিলাম। কিন্তু ঢুকতে পারিনি। খারাপ লাগছে। এখন দু’বন্ধু চন্দ্রিমা উদ্যানে ঘুরে বাসায় চলে যাব।’
সকাল ৯টার দিকে তেজগাঁওয়ে গিয়ে দেখা গেছে, জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রবেশ পথগুলোর সামনে নারী, শিশুসহ শত শত মানুষের ভিড়। গেটগুলোতে দায়িত্বপালনকারী নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, আসনপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সকাল ৭টার আগেই সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের উল্টো দিকে সাধারণ মানুষের প্রবেশের দুটি গেটের সামনে ভিড় ছিল বেশি। অনেককে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
প্রবেশ করতে না দেয়ায় কয়েকবার উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ বন্ধ গেটের টিনের বেড়া ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন, কেউ ভেতরে ঢিলও ছোড়েন। তবে পুলিশসহ বিপুলসখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য থাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
মিরপুর থেকে দোকানদার আবুল হোসেন এসেছেন কুচকাওয়াজ দেখতে। তিনি বলেন, ‘এমন তো কোনোদিন দেহি নাই। গত বছরও আমি আইছিলাম। সিট নাই আমরা দাঁড়াইয়া দেখমু, সমস্যা কী? কিন্তু ঢুকতে দিতাছে না, ক্যান।’
কেউ কেউ প্রবেশ গেটের টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে কুচকাওয়াজ দেখার নিরন্তরে চেষ্টা চালিয়েছেন দুপুর পর্যন্ত। কিন্তু ভেতরে সেনাসদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান ও সাদা কাপড়ের বেড়া ছাড়া কিছুই দেখতে পারনি তারা
জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা যোগ দেন। কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, কূটনৈতিক ও আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত থাকেন। কুচকাওয়াজে থাকে বিমানবাহিনীর আকর্ষণীয় অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে।
আরএমএম/জেইউ/বিএ/আরআইপি