মোবাইল ব্যাংকিং ‘ডাক টাকা’ উদ্বোধন
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ‘ডাক টাকা’ নামে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মাত্র দুই টাকায় হিসাব খোলা যাবে।
সোমবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সজীব ওয়াজেদ জয় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ডাক টাকা’ প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা প্রায় ৩ কোটি মানুষকে আগামী এক বছরে এই সেবার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে ডাক বিভাগের।
সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ডি-মানি’র মাধ্যমে খুব সহজেই ‘ডাক টাকা’ হিসাব খুলে পোস্টাল ক্যাশ কার্ডের মাধ্যমে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করা যাবে। দুই টাকা ব্যালেন্স জমা করার মাধ্যমে নাগরিকরা বিনামূল্যে ‘ডাক টাকা’ হিসাব খুলতে পারবেন বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
আগামী তিন মাসের মধ্যে ‘ডাক টাকা’র বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে। তখন সাধারণ মানুষ ‘ডাক টাকা’ ব্যবহার করে সুবিধা নিতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি সার্ভিস ডিজিটাইজ করছি, আমরা চাই মানুষের জীবন সহজ করতে। সব কিছু যাতে মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘ডাক বিভাগের আট হাজারেরও বেশি ডাকঘর আছে। গ্রামে সব জায়গায় ব্যাংক ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যাংক থাকে না, এই ডিজিটাল টাকা মানুষের হাতে কীভাবে পৌঁছাবো? আমাদের চিন্তা ছিল ডাকঘর দিয়ে এই সেবা মানুষের কাছে পৌঁছাবো। যেখানে বসে তারা টাকা লেনদেন, ভাতা পাওয়া ও খরচ ডিজিটালি করতে পারবেন।’
এই সেবার মাধ্যমে গ্রামের মানুষ লাভবান হবে জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আজ এই সফটওয়্যার দেখে খুব আনন্দিত, এটা হচ্ছে আমাদের ফাস্ট স্টেপ। আশা করি এটি সাকসেসফুল হবে, মানুষ যত বেশি এটি ব্যবহার করবে ততবেশি সেবা হবে।’
‘দেখে খুবই আনন্দিত যে দুই টাকা দিয়ে ব্যাংক হিসাব খোলা হল। সার্ভিসটি লঞ্চ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত’ বলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা।
টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মর্জিনা বেগমের ‘ডাক টাকা’ হিসাব খুলে এর উদ্বোধন করা হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘ডাক টাকা’র মাধ্যমে ২০১৮ সালের মধ্যে তিন কোটি মানুষকে ব্যাংকিং এর আওতায় আনা হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ডাক টাকা’ ব্যবহারকারীরা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন করতে পারবেন। ডাক টাকা হচ্ছে একটি ডিজিটাল ওয়ালেট। ডিজিটাল পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এই ওয়ালেটটি ব্যবহার করা যাবে। এর মাধ্যমে মার্সেন্ট ও খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের অংশ হওয়া যাবে।
‘ডাক টাকা’র মাধ্যমে কার্ড, অ্যাপ ও এপিওএস (আর্থিক লেনদেনে ইলেক্ট্রনিক কার্ডের বিকল্প ব্যবস্থা-মোবাইল পয়েন্ট-অব-সেল) সহ বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। নাগরিকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এতে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি-রেডিও সিগন্যালের মাধ্যমে ফাইল ট্রান্সফার করা যায়) ও কিউআর কোড সুবিধা রাখা হবে।
‘ডাক টাকা’ কার্যক্রম উদ্বোধন করতে সোমবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে আসেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সচিবালয়ে এসে উপস্থিত হলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম তাকে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক ও ডি-মানির চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এআরএস/জেআইএম