ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চাপ মারধর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি : দাবি পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৫৩ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

'নিখোঁজ' থেকে ফেরত আসার পর পুলিশ চাপ দিয়ে ও মারধর করে ‘মিথ্যা’ স্বীকারোক্তি আদায় করেছে বলে শনিবার অভিযোগ করেছেন কবি-প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার। তবে তার একথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।

পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স জানায়, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রোববার সকালে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়া হয়। এখানে মারধর, নির্যাতন বা জোর করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়াও পুলিশ তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করেনি।

ফরহাদ মজহারের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে সহেলী ফেরদৌস আরও বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে। সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ মজহার যা বলেছেন সেটা তার নিজস্ব মতামত।

এর আগে চলতি বছরের ৩ জুলাই ভোর সাড়ে ৫টায় নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন ফরহাদ মজহার। নিখোঁজের পর তাকে অপহরণর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। তার সহকর্মীরা এ অপহরণের জন্য প্রতিবেশী দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় ফরহাদ মজহারকে খুলনার হানিফ পরিবহনের ঢাকাগামী একটি বাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারের পর দীর্ঘ ১০ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ জানায়, ফরহাদ মজহার স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছিলেন। সে সময় এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ফরহাদ মজহারের এ ঘটনাকে ‘অপহরণ নাটক’, ‘মিথ্যাচার’, ‘সাজানো গল্প’বলে উল্লেখ করেন।

‘ফরহাদ মজহার স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছেন, সরকারকে বিব্রত করার জন্য তিনি এ ধরনের রটনা রটিয়েছেন’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে বৃহস্পতিবার মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করায় ফরহাদ মজহার দম্পতির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলার অনুমতি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। আদালতের অনুমতি অনুযায়ী রাজধানীর আদাবর থানায় মামলা দায়েরের কথা ছিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার।

আদালতের সিদ্ধান্ত দেখে ঘটনার পাঁচ মাস পর গতকাল শনিবার অবশেষে এসব বিষয়ে মুখ খোলেন ফরহাদ মজহার।

নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি নাটক করিনি, আমাকে যা বলা হয়েছে, তাই করেছি। আদালতে দেয়া জবানবন্দি আমার না। আমাকে যা লিখে দেয়া হয়েছে, আদালতে তাই দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ‘গুম’করার উদ্দেশ্যেই ধরে নেয়া হয়েছিল। সেখান থেকে উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জোরাল ভূমিকা রেখেছে, তবে পরে চাপ দিয়ে ও মারধর করে আমার কাছ থেকে ‘মিথ্যা’ স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অবস্থায় আদাবর থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিশ্রুতি দিয়েও পরিবারের কাছে যেতে দেয়া হয়নি। অনেকক্ষণ থানায় বসিয়ে রেখে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিবি অফিসে বিধ্বস্ত অবস্থায় জেরা ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার জন্য লিখিত কপি দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়।

এদিকে ফরহাদ মজহারের সংবাদ সম্মেলনের পর এ বিষয়ে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, ফরহাদ মজহারের অপহরণ রহস্যজনক। তার কথাবার্তা, আচার আচরণ রহস্যজনক। তিনি তিনমাস পর এসে হঠাৎ সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজের অবস্থান কেন জানান দিচ্ছেন?

তিনি আরও বলেন, যারা গুম কিংবা নিখোঁজ হচ্ছেন, পুলিশের দায়িত্ব তাদের ফিরিয়ে আনা। তারা একা ফিরে এলে পুলিশ তদন্ত করবে। অপহরণ হলেও তদন্ত করবে। তবে পুলিশের দায়িত্ব বেশি।

এআর/এএইচ/আইআই

আরও পড়ুন