এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?
পুলিশ প্লাজা হয়ে হাতিরঝিলে উঠতেই যানজট। দীর্ঘ যানজটে দাঁড়িয়ে বাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল সিএনজিসহ প্রতিটি যানবাহন। সময় গড়ায়, আধা ঘণ্টা যায়, পেরিয়ে যায় ঘণ্টা। কিন্তু ঘোরে না গাড়ির চাকা।
সময় যত যেতে থাকে যাত্রীদের রাগ-ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সে রাগে নেই কারও ভ্রুক্ষেপ। কেউ বা যানবাহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই রওনা দেন গন্তব্যের উদ্দেশে। প্রত্যেকের একটি প্রশ্ন- এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?
বৃষ্টিতে যানজট, গরমেও যানজট, থমকে গেছে অ্যাম্বুলেন্স কিংবা ভিআইপি যানবাহন। বন্ধ হয়ে গেছে ভিভিআইপি যানবাহনের ভেপুর আওয়াজ। কারও যেন করার কিছু নেই। এ চিত্র শুধু বাড্ডা, রামপুরা, হাতিরঝিল, বনানী, উত্তরা, ফার্মগেইট কিংবা বিশ্বরোডের নয়, এ চিত্র পুরো রাজধানীর। যানজট নিরসনে অসহায় ট্রাফিক কর্মকর্তারাও।
রাজধানী ঢাকায় যানজট খুব পরিচিত দৃশ্য হলেও শনিবার তা ঢাকাবাসীর সামনে নতুন এক মাত্রা নিয়ে হাজির হয়। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে এদিন সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে রাজধানীতে। আর অসহনীয় যানজটও শুরু হয়েছে সকাল থেকেই। বিকেল গড়িয়ে তা মহাযানজটে পরিণত হয়। মাসখানেক ধরে ধুলার যে অত্যাচার ছিল হঠাৎ বৃষ্টির কারণে তা পরিণত হয়েছে কাদায়। সে কাদায় শুরু নতুন ভোগান্তি।
মেরুল বাড্ডার ইউলুপ নির্মাণ কাজ ও রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন সিটি কর্পোরেশনের স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণ কাজের ধীর গতির কারণে গতি হারিয়েছে সড়কে যানচলাচল। এর চাপ পড়ছে উত্তরা, গুলিস্তান, মালিবাগ, খিলগাঁও, রামপুরা-ডেমরা রুটের সড়কে।
শনিবার রাত ৮টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিরঝিলে দীর্ঘ যানজট। রামপুরা ব্রিজ ফাঁকা দেখা গেলেও মেরুল থেকে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট। নতুনবাজার থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক, উত্তরা, বনানী, বিজয় সরণী, মহাখালী, আগারগাঁও এলাকাতেও একই চিত্র।
গুলশান-১ থেকে পুলিশ প্লাজা হয়ে হাতিরঝিল ঢোকার মুখে যানজটে আটকা পড়া মোটরসাইকেল আরোহী রাশেদুল ইসলাম বলছেন, রাজধানীতে যানজট প্রকট আকার ধারণ করায় বাসে চলাচল এখন সময়সাপেক্ষ। সময় নিয়ে বেড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত সময়ে পৌঁছানো যায় না গন্তব্যে। যে কারণে বাইকে চলাচল করছি। কিন্তু ক’দিন ধরে বাইকের চাকাও আটকে যাচ্ছে যানজটে। ২ মিনিটের রাস্তা পেরুলেই মেরুল বাড্ডা হয়ে রামপুরা ব্রিজে ওঠা যেত। তা এখন এক ঘণ্টাতেও সম্ভব হচ্ছে না।
যানজট এড়াতে গুলশানে না ঢুকে গুদারাঘাট হয়ে হাতিরঝিল ঢুকতে গিয়েও যানজটে পড়েন সিএনজি চালক রশিদ মিয়া। তিনি বলেন, আগের চেয়ে ‘টিপ’ কইম্মা গেছে। এর মধ্যে এতো যানজট যে সারা দিনের একটা বড় অংশ রাস্তাতেই আটকে থাকতে হয়। দিন শেষে জমার টাকাও উঠে না।
মেরুল বাড্ডায় সড়কে বৃষ্টি কিংবা রোদ সব সময়ই দায়িত্বে থাকেন ট্রাফিক সদস্যরা।
রেইনকোট পড়ে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক সদস্য বলেন, ‘রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তার বেহাল দশা। কিন্তু যানজট তৈরি হলেই দোষ ট্রাফিক পুলিশের। আজকের অনবরত বৃষ্টিতে জলজট তৈরি না করলেও যানজট তৈরি করেছে।
পালাক্রমে আমরা সহকর্মীরা নিরবিচ্ছিন্ন চেষ্টা করছি, রাস্তায় থাকছি। ভিজে, ছাতায় মাথায়, ঠান্ডায় কাজ করছি।
ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার(ডিসি) সাইদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কষ্ট করছেন। সাধারণ মানুষ দেখছে যানজটের কারণ কী। ইউলুপ নির্মাণ, মেরুলে ভাঙা সড়কের কারণে গাড়ির চাপ বাড়ছে। যে কারণে সিগন্যালে বেশি সময় আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
জেইউ/এনএফ/এমএস