ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ঢাকায় হামলার পরিকল্পনা ছিল আল কায়েদার

প্রকাশিত: ০৮:২৭ এএম, ০২ জুলাই ২০১৫

ঈদুল ফিতরের পর রাজধানীতে বড় ধরণের হামলার পরিকল্পনা ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের আল-কায়েদা শাখা (একিউআইএস)। পরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামী মাইনুদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনকে ছাড়িয়ে আনতে জেলখানা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনায় ছিল সংগঠনটির। র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে একিউআইএস-এর বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী ও সাবেক হুজি নেতা মুফতি মাইনুল ইসলাম ও একিউআইএস উপদেষ্টা মাওলানা জাফর আমিনসহ মোট ১২ জনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদে এ তথ্য জানা গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টায় র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, তাদের এসব পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় উপমহাদেশে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি প্রদেশ ও দেশ নিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করা। এজন্য তারা আইএস এর শাখা একিউআইএস এর কার্যক্রম বাংলাদেশেও শুরু করে।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, তাদের পরিকল্পনা ছিল ঈদের পর রাজধানীতে বড় ধরণের নাশকতা চালানো। এ লক্ষ্যে বেশ কিছু জঙ্গি সদস্য ঢাকায় জড়ো হবে। এজন্য তারা রাজধানীর মিরপুরে একটি বাসাও ভাড়া নেয়। তবে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ ব্যাটালিয়নের একটি দল বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর সদরঘাট থেকে একিউআইএস এর বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিম ওরফে নানা ওরফে বদিউল (৩৫), একিউআইএস এর বাংলাদেশের উপদেষ্টা মুফতি জাফর আমিন ওরফে সালমান (৩৪), সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম (২০), মো. মোশাররফ হোসেন(১৯) ও আব্দুল রহমান বেপারীকে (২৫) আটক করে।

পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে একিউআইএস এর সক্রিয় সদস্য আল আমিন ওরফে ইব্রাহিম(২৮), মোজাহিদুল ইসলাম (৩১), আশরাফুল ইসলাম (২০), রবিউল ইসলাম (২৮) ও মো. হাবিব উল্লাহকে (২৬) আটক করা করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুর-১ এর ৯ নং ওয়ার্ডের ৬৮ নং বর্ধনবাড়ির ভাড়া করা বাসায় অবস্থানকারী মো. শহিদুল ইসলাম (১২) ও আলতাফ হোসেন (২৬) কে আটক করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে সালফার এসিড, গন্ধক, সালফিউরিক এসিড, পটাশিয়াম অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটসহ বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য, বিস্ফোরক ডিভাইস, বোমা তৈরি সরঞ্জামাদি, বিভিন্ন ধরণের ক্ষুদ্রাস্ত্র, জিহাদি বই, মোবাইল ও ব্যাংকের চেক উদ্ধার করা হয়।

তিনি জানান, আল কায়েদার প্রধানের ভিডিও বার্তা ও আইএস জঙ্গীদের কার্যক্রম দেখে দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলো তৎপর হওয়ার চেষ্টা করছে।

হরকাতুল জিহাদ এর শীর্ষ নেতা মাওলানা মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবুল জান্দাল ব্রিটিশ হাই কমিশনের উপর হামলার মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী। তিনি জেল হাজতে থেকে মোবাইল ও চিঠির মাধ্যমে জেলের বাইরে আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ পূর্বক সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে “দাওয়াতে তাবলীগ” নামে এবং পরবর্তিতে “৩১৩ বদরের সৈনিক” নামে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা চালায়।

উপমহাদেশে আল-কায়েদার বিস্তারকে সামনে রেখে বাংলাদেশে সর্বাত্মক কার্যক্রম শুরু হলে তারা একিউআইএস- এ যোগদান করবে বলেই সংগঠনটির পরিকল্পনা ছিল।

এছাড়া হুজি সংগঠনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিস্ক্রিয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার চেষ্টাও চালিয়ে আসছিল। এজন্য তারা দাওয়াতে তাবলীগ গঠন করে। তিন স্তরে এই দাওয়াতে তাবলীগ কাজও শুরু করেছে বলে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়।

তিনি আরো বলেন, তারা রাজধানীতে হামলার পরিকল্পনার জন্য ঢাকায় একত্রিত হয়ে রাজধানীর বাইরে অবস্থান নেবে। তারা ঢাকার বাইরে ট্রেনিং ক্যাম্প গড়ে তোলার পরিকল্পনাও করে। এজন্য তারা বগুড়ায় একটি মাদ্রাসার মাঠও নির্ধারণ করেছিল।

তিনি আরও জানান, ৩১৩ বদরের সৈনিক সংগঠনটির অর্থদাতা সৌদি আরব ও দুবাই থেকে ফিদাই মাওলা নামে ফেইসবুক ব্যবহারকারী রফিক নামে জনৈক ব্যক্তি। জাফর আমিন ওরফে সালমানের এই টাকা সংগঠনের কাছেন পৌঁছে দিতো।

আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আরও অভিযান চালানো হবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, মিডিয়া উইং এর উপ-পরিচালক মেজর রুম্মন মাহমুদ ও সিনিয়র সহকারি পরিচালক মেজর মাকসুদুল আলম।

# আল-কায়েদার বাংলাদেশি প্রধান সমন্বয়কারীসহ ১২ জঙ্গি আটক

জেইউ/এআরএস,এএইচ/পিআর