ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আলোর মুখ দেখছে ঢাকা-আশুলিয়া উড়ালসড়ক প্রকল্প

মেসবাহুল হক | প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, ০৭ নভেম্বর ২০১৭

শিগগিরই আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে প্রস্তাবিত ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। আর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে করবে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি)। প্রতিষ্ঠানটিকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দিতে বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিতব্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ।

সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের লক্ষ্যে সিএমসির সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ইপিসি (ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রোকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশান) টার্নকি কনট্রাকের ভিত্তিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল্যের ক্রয় প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের নকশা ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। সর্বশেষ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কমিটিতে অনুমোদন হলে পরিকল্পনা অনুযায়ী সময়মতোই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সূত্র জানায়, এই উড়ালসড়কটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়ক থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড-চন্দ্রা ইন্টারসেকশনে গিয়ে শেষ হবে। এক্সপ্রেসওয়েটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ২৪ কিলোমিটার। এর উভয় পাশে চারলেনের ১৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কও নির্মিত হবে।

জানা গেছে, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী আশুলিয়া অংশের যানজট নিরসন হবে অনেকাংশে। এছাড়া ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর ও পশ্চিমের অন্তত ৩০টি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত সহজ হবে। উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের ঢাকা ছাড়ার জন্য গাবতলী, সাভার এবং চন্দ্রা এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকার প্রয়োজন হবে না।

প্রকল্পটির নির্মাণ পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য এটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে সিএমসি। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী টোল আদায়ের মাধ্যমে তারা তাদের বিনিয়োগের অর্থ তুলে নেবে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের পাশ দিয়ে একটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসে এই উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবটিকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পিপিপির ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়া হয়।

এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৩ সালে প্রকল্পের প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চালায়। এতে বিমানবন্দর সড়ক থেকে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর ইন্টারসেকশন ও ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা ইন্টারসেকশন পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় এবং চূড়ান্ত সমীক্ষায় এর দৈর্ঘ্য কমিয়ে ২৪ কিলোমিটার করার প্রস্তাব করা হয়।

প্রথমে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি বা পিপিপির মাধ্যমে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্প থাকলেও পরবর্তীতে তা বাতিল করে জি-টু-জি ভিত্তিতে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ২৪ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হবে চীনের অর্থায়নে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ১৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দেবে ১০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা চীনের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেয়া হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় আরও রয়েছে, ১০ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ র্যাম্প, নবীনগর ইন্টারসেকশনে থাকবে ১ দশমিক ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ নবীনগর ফ্লাইওভার, ১৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার ২ লেন সার্ভিস রোডসহ এটগ্রেড সড়ক পুনর্নির্মাণ, দুটি ২ দশমিক ৭২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু, ৫০০ মিটার ওভারপাস/ ফ্লাইওভার, ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য ১৮ কিলোমিটার ড্রেনেজ ও ডাক্ট এবং ৫টি টোল প্লাজা।

২০২২ সালে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেতু বিভাগ।

এমইউএইচ/জেডএ/বিএ

আরও পড়ুন