উড়াল সেতু : উঠতে ফাঁকা নামতেই যানজট
‘যানজটের দেখছেন কি? আজ তো গাড়ির চাপ নেই বললেই চলে। দেখেন না সেতুর ওপর কেমন ফাঁকা। কিন্তু সেতু থেকে নিচে নামতেই দীর্ঘ যানজট লেগে গেছে। পুরোদমে গাড়ি যাতায়াত শুরু হলে কি ভয়াবহ যানজট হবে আল্লাহই জানেন।’
বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ২টায় সদ্য উদ্বোধনকৃত মৌচাক-মালিবাগ উড়াল সেতুর মগবাজার ইস্কাটন অংশে নিউ ইস্কাটনের সামনে দাঁড়িয়ে কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও গাড়ি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান।
একটু লক্ষ্যে করতেই দেখা যায় উড়াল সেতুর ওপর দিয়ে হাতেগোনা কয়েকটি বাস, মিনিবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন উঠানামা করছে। তাকাতেই দেখা যায় সেতুর ওপরটা বলতে গেলে একেবারেই ফাঁকা। চোখের পলকে দ্রুতগতিতে যানবাহন গন্তব্যে ছুটছে। কিন্তু বিপত্তি ঘটছে সেতু থেকে নামার পর পরই। নিউ ইস্কাটন থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে। যানজট ছাড়তে গড়ে তিন থেকে আট মিনিট পর্যন্ত সময় লাগছে।
উদ্বোধনের প্রথমদিনই ইস্কাটন-বাংলামোটর অংশে এহেন যানজটে স্বপ্নের উড়াল সেতু চালুর ফলে যানজট কমবে নাকি বাড়বে তা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের উড়াল সেতু দিয়ে মৌচাক, মালিবাগ, রাজারবাগ, মগবাজার, ইস্কাটন, রমনা ও তেজগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য যানবাহন চলাচলের কারণে নিচের সড়কে যানবাহনের চাপ কমবে। মানুষ দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
তবে উড়াল সেতুর ওপর যানবাহন চলাচলে সমস্যা না হলেও সেতু থেকে নামার প্রতিটি মুখে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হবে বলে ভিন্নমত রয়েছে।
শাহজাহানপুরের বাসিন্দা আকরাম হোসেন ইস্কাটনের সামনে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যানজটে পড়ে ছিলেন। তিনি জানান, রাজারবাগের সামনে থেকে গাড়ি একটানে চলে এলেও এখানে মিনিট পাঁচেকের বেশি সময় যানজটে পড়ে আছেন।
বাংলামোটরে কর্তব্যরত এক পুলিশ সার্জেন্ট জানান, এ এলাকায় যানজট নতুন কিছু নয়, উড়াল সেতু থেকে নামার পর যানজট হলেও তা খুব বেশি সময় স্থায়ী হবে না। তবে যানজট কমাতে হলে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ বন্ধ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আজ এই উড়াল সেতু উদ্বোধনকালে নগরবাসীকে ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালানোর অনুরোধ জানান।
জানা গেছে, ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ উড়াল সেতুর বিভিন্ন স্পটে সিগন্যাল বাতি বসানো হয়। সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণে লোকজনও নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এমইউ/এএইচ/জেআইএম