ঈদে বাড়তি ভাড়া আদায় রোধে ভিজিলেন্স টিম
ঈদে ঘরমুখো ও ঢাকা ফেরত মানুষের কাছ থেকে কোনো সিন্ডিকেট যেন সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বা দাবি করতে না পারে সে জন্য ঢাকা মহানগরীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনালের জন্য পৃথক তিনটি ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হচ্ছে।
রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেলে আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যায়ের এক বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরে ফেরা ও কর্মস্থলে ফিরতে মানুষ যেন দীর্ঘ যানজটে না পড়ে সে জন্য প্রচলিত রুটের বাইরে আরো ১০টি রুট নির্ধারণ করেছে সরকার। ঢাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।
ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ ও বর্হিগমনের মূল সড়কগুলোকে বাদ দিয়ে যানজট কমানোর জন্য যাত্রাবাড়ী-ডেমরা-সুলতানা কামাল সেতু-সিলেট রুট, টঙ্গী স্টেশন রোড-শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু-মীরেরবাজার-উলুখেলা-কাঞ্চন ব্রিজ-ভুলতা-মদনপুর-চট্টগ্রাম, বাবুবাজার ব্রিজ-ইকুরিয়া-পোস্তগোলা ব্রিজ-পাগলা-চাষাঢ়া-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড-সাইনবোর্ড-চট্টগ্রাম রুট, টঙ্গী স্টেশন রোড-শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু-মিরেরবাজার-ঘোড়াশাল-পাঁদোনা-সিলেট রুট, বাবুবাজার-উলুখেলা-কাঞ্চন ব্রিজ-ভুলতা-মদনপুর-চট্টগ্রাম, বাবুবাজার ব্রিজ-ইকুরিয়া পোস্তগোলা ব্রিজ- পাগলা-চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড-সাইনবোর্ড-সিলেট, টঙ্গী স্টেশন-শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু-মিরেরবাজার-উলুখোলা-কাঞ্চন ব্রিজ-ভুলতা-সিলেট রুট, হাতিরঝিল-রামপুরা-শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা-সুলতানা কামাল-কাঁচপুর ব্রিজ-সিলেট-চট্টগ্রাম, গাবতলী-মাজার রোড-মীরের দৌড়-আশুলিয়া-ইপিজেড-চন্দ্রা হয়ে উত্তরবঙ্গ, রায়ের বাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু-জিঞ্জিরা-কেরাণীগঞ্জ-মাওয়া এবং মিরপুর মাজার-ধৌউর-বিরুলিয়া-আশুলিয়া-মহাসড়ক-উত্তরবঙ্গ রুট ব্যবহার করা হবে।
এই দশটি রুটের মাধ্যমে যাত্রীবাহী যানবহনকে ঢাকা ছাড়তে এবং ঈদের পর ঢাকায় প্রবেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
যানজট ও মানুষের চাপ কমাতে ভিন্ন ভিন্ন দিনে গার্মেন্টসগুলোকে ছুটি দেওয়া ও খোলার জন্য এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও বৈঠকে জানানো হয়।
এছাড়া আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে মগবাজার ফ্লাইওভারের কাজ ঈদের আগের সাত দিন ও পরের তিন দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
মগবাজার ফ্লাইওভারের ধীর গতির কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কোম্পানির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, তারা কি করছেন আমি জানি না। তারা জনগণের ভোগান্তির বিষয়টা কি দেখে না? তাদের কাজ শেষ করতে কত দিন সময় লাগবে? এই প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) চুপ করে আছেন কেন? আমি যোগাযোগ সচিবকে বলবো, আপনি গুরুত্ব সহকারে কাজটি দেখুন। কাজ না করলে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হোক।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা ওয়াসা ও সিডিএ’র আওতাধীন রাস্তাগুলো ১০ জুলাইয়ের মধ্যে মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা এবং কাটা রাস্তা মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয় বৈঠকে।
এছাড়া গত বছর ভয়াবহ নৌ-দুর্ঘটনা মাথায় রেখে এ বছর যে কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কাজের জন্য ফায়ার সার্ভিস, নৌ-বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর বিশেষ টিম প্রস্তুত রাখার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও র্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখার কথা বৈঠকে বলা হয়েছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এই বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির, পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামানসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/আরএস/আরআই