রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়াতে হবে
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধোনে বিশ্ববাসীকে মিয়ানমারের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে হবে। বাংলাদেশ সমস্যাটি সমাধানের জন্য কুটনৈতিকভাবে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়াতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী শুক্রবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘শোকেস কোরিয়া-২০১৭’ এর উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তাব দিয়েছে। অপরদিকে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন, হত্যা, ঘর-বাড়ি জালিয়ে দেয়া অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমার সরকার। ফলে এখনও হাজার হাজার রোহিঙ্গা জীবন রক্ষার জন্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। রোহিঙ্গাদের কষ্ট আমরা বুঝতে পারি। তাদের নিজ ঘর-বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে হবে। শোনা যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলে শিল্প পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। ১৮২৪ সালে বৃটিশ-বার্মা যুদ্ধে বৃটিশরা জয়লাভ করে। তখন থেকে আরাকান রাজ্যে মুসলমানরা সম্মানের সঙ্গে বসবাস করে আসছে। এখন তাদের অবৈধ বলার সুযোগ নেই। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, কোরিয়ার সব কোম্পানি বাংলাদেশেই তাদের পণ্য তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশের মানুষের কোরিয়ার তৈরি পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা রয়েছে। এখানে পণ্য প্রস্তুত করে রফতানি করলেও কোরিয়া লাভবান হবে। কোরিয়ার প্রায় ২০০টি প্রতিষ্ঠান ইপিজেড-এর ব্যবসা পরিচালনা করছে। সেখানে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায় ব্যবধান অনেক। গত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে কোরিয়া থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ১২৬৮.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে রফতানি করেছে ২৩৮.২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ইপিজেড-এ কোরিয়া ৭ম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ। কোরিয়া বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে। কোরিয়ায় রফতানি বৃদ্ধি করে এ বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব।
বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো শোকেস কোরিয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলা ১৪ তারিখ পর্যন্ত বিনামূল্যে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। কোরিয়ার ৩৬টি কোম্পানি তাদের পণ্য নিয়ে মেলায় অংশ গ্রহণ করছে। এলজি, স্যামসাংসহ বিভিন্ন কোম্পানির ইলেক্ট্রনিক, মেশিনারিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য রয়েছে।
কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টি-এর প্রেসিডেন্ট ও মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত অন সিঅং-ডু, এলজি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইডোয়ার্ড কিম, কোরিয়া ইপিজেড-এর প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর সাদাত। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টি সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহাব উদ্দিন খান।
এমএ/ওআর/আইআই