বিশ্বব্যাংককে সমুচিত জবাব দিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংককে সমুচিত জবাব দিয়েছি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আনীত তথাকথিত ‘দুর্নীতি’র মিথ্যা অভিযোগের জবাবও তারা পেয়েছে। তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী একটি মহল পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করে। অতি উৎসাহী মহল জনগণকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। যারা এসব করেছে তারা জবাব পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে তিন সপ্তাহের সফর শেষে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। যারা আমাদের এই পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে মিথ্যা অপবাদ এবং বাংলাদেশের সামর্থ্যকে হেয় করার চেষ্টা করেছিল আমরা তাদের সমুচিত জবাব দিয়েছি।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদ্য সমাপ্ত ৭২তম অধিবেশনে তার সফল অংশগ্রহণের জন্য এক সংবর্ধনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে আবারও বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একে কেন্দ্র করে তার সরকার এবং পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটনা করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, অনেকেই মনে করে যখন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এমন অভিযোগ করছে, কাজেই এটি সত্যি হতে পারে। কিন্তু আমার আত্মবিশ্বাস ছিল যে, এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই আমার এই দেশে আসা, নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও সংবর্ধনায় বক্তৃতা করেন। আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, পেশাজীবী পরিষদ, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, ক্রীড়াবিদ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভূমিকার কারণেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট বিশ্ববাসীর মনোযোগ পেয়েছে।
এবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সঙ্কট অবসানের জন্য পাঁচ প্রস্তাব তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রশংসায় ভেসেছেন তিনি। রোহিঙ্গা সঙ্কটে সাহসী সিদ্ধান্ত ও উদার মনের পরিচয় দেয়ায় দেশে ফিরে সংবর্ধনায় সিক্ত হন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জাতীয় কর্তব্য হিসেবে মিয়ানমারের এই মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা তাদের আশ্রয় না দিলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারতাম না। আন্তর্জাতিকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। তারা (রোহিঙ্গা) যেন স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। মিয়ানমারের একজন এসেছে। এটা একটা বিশেষ দিক।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একেবারে প্রতিবেশী একটা পর্যায়ে এমন একটা ভাব দেখাল… আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ বেধেই যাবে। আমাদের সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড, পুলিশসহ সবাইকে সতর্ক করলাম… যেন কোনোমতেই কোনোরকম উস্কানির কাছে বিভ্রান্ত না হয় যতক্ষণ পর্যন্ত আমি নির্দেশ না দিই।
এফএইচএস/একে/আরআইপি