এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের স্মার্ট কার্ড দেবে সরকার
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের স্মার্ট কার্ড দেবে সরকার। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
রোহিঙ্গা এতিম শিশুদের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের করণীয়’ সম্পর্কে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি রোহিঙ্গা এতিম শিশুদের জন্য স্মার্ট কার্ড দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ জন্য তাদের ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে। এ শিশুদের বিশেষ যত্ন নেয়া হবে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতনের ঘটনা সুদূর অতীতের সব পৈচাশিকতাকে হার মানিয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও নির্ভিক কণ্ঠে অনবদ্য মানবিকতার ঘোষণা দিয়ে প্রমাণ করলেন বিশ্ব মানবের হিত সাধন করে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ।
তিনি বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শেখ রাসেল শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে শিশুদের যেভাবে সেবা দেয়া হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেই আদলেই রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
সমাজকল্যাণ সচিব জিল্লার রহমান বলেন, সোমবারের তথ্য অনুযায়ী ৪ লাখ ২৪ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে।
সবচেয়ে আধুনিক ডিজিটাল ফর্মে তাদের স্মার্ট কার্ড দিচ্ছি। যেখানে বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে গুগলে ফর্মটা নিয়ে পূরণ করে ছবি নিয়ে উখিয়ে অফিসে চলে যাচ্ছে। পরের দিন আমরা স্মার্টকার্ডটা পৌঁছে দিচ্ছি। ডাটাবেজ তৈরির কাজে ১২০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
‘গুগল ফর্ম একটি ডিজিটাল পদ্ধতি। এটা আমরাই প্রথম বাংলাদেশে চালু করেছি। এর মাধ্যমে অল্প কয়েক দিনে আমরা প্রায় ২ হাজার শিশুর ডাটাবেজ তৈরি করেছি।’
আগামী সাত দিনের মধ্যে এতিম শিশুদের স্মার্টকার্ড দিয়ে চিহ্নিত করে ফেলা হবে জানিয়ে জিল্লার রহমান বলেন, ধারণা করছি ৪-৬ হাজার এ ধরনের বাচ্চা থাকতে পারে।
কেন স্মার্টকার্ড দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ১৩-১৮ বছর বয়সটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের ওই দলগোষ্ঠীর মধ্যে রাখা হলে হয়তো তারা অশান্তির কাজে জড়িয়ে যেতে পারে। এজন্য সরকারের বিবেচনা হচ্ছে শিশুদের আলাদা করে ফেলা।
সরকার বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে ০-৭ এবং ৮-১৮ বছর পর্যন্ত এতিম শিশুদের খাওয়া-প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে জানিয়ে সচিব বলেন, আমরা চিন্তা করছি তারা যে কয়দিন এখানে থাকতে বাধ্য হয়, সেই কয়দিন যাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে রাখতে পারি। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা উখিয়া ও টেকনাফে ২০০ একর করে আলাদা জায়গা দেবে। সেখানে ৩০০/৪০০/২০০/২৫০ জনের ক্যাম্প করে বাচ্চাদের রাখার কথা ভাবছি।
তিনি আরও বলেন, নির্দেশনা না আসলেও ওখানে শিশুদের ক্লাসিফিকেশন করার চিন্তা-ভাবনা আছে। ০-৭ এবং ৮-১৮ বছরের শিশুদের আলাদা আলাদা রাখা হবে। প্রধানমন্ত্রী ফিরলে এটা নিয়ে আলোচনা হবে।
রোহিঙ্গা বিধবা বা অন্যান্য শিশুদের বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি থাকবে কিনা-জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এতিমদের নিয়ে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে অতি বৃদ্ধদের বিষয়টি বিবেচনায় রাখছি। এটা আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করব।
আরএমএম/এনএফ/এএইচ/জেআইএম/আইআই