ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

রাত ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:২৫ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এবার দুর্গা পূজায় রাত ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন শেষ করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

রোববার সচিবালয়ে শারদীয় দুর্গা পূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা শুরু হবে। প্রতিমা বিসর্জন হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।

মন্ত্রী বলেন, ‘(প্রতিমা) বিসর্জনের শোভাযাত্রায় আমরা নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করব। সেখানে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে সময়টা মেইনমেইন করার জন্য। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিকেল ৩টার মধ্যে সবাই এসে যাবেন। আমরা যাতে রাত ৮টার মধ্যে বিসর্জন শেষ করতে পারি। এজন্য আমরা বিশেষ অনুরোধ করেছি। পূজা উদযাপন কমিটিও আমাদের সেই ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন। তারা সময়টা মেইনটেইন করবেন বলে জানিয়েছেন।’

সারাদেশে ৩০ হাজার ৭৭টি পূজা মণ্ডপ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থা অনেক সুন্দর, অনেক ভাল ও অনেক নিরাপদ। সেজন্য গত বছর ২৯ হাজার ৩০০টি পূজা মণ্ডপ হয়েছিল। পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি আমাদের জানিয়েছেন, এবার ৩০ হাজার ৭৭টি পূজা মণ্ডপ সারাদেশে হবে। সারাদেশে উৎসবমুখর পরিস্থিতিতে পূজা অনুষ্ঠিত হবে, যেটা প্রতিবার হয়ে থাকে।’

‘প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আমরা সবাই এই উৎসবে যোগ দেব।’-বলেন মন্ত্রী।

বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট
মন্ত্রী বলেন, ‘পূজা মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময় সহযোগিতা করবে। ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

তিনি বলেন, ‘শারদীয় দুর্গা পূজায় বিঘ্ন সৃষ্টিকারী ও দুষ্কৃতিকারীদের অশুভ তৎপরতার বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে যাব। যেখানে আমাদের যা প্রয়োজন হবে, দরকার হলে আমরা মোবাইল কোর্ট পর্যন্ত স্থাপন করব। যাতে করে কেউ এই ধরনের বাধা দিতে আসে বা বিঘ্ন সৃষ্টি করতে চায়; যাতে আমরা তাদের কিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে পারি।’

এ বছর ঢাকা মহানগরীতে ২৩১টি পূজা মণ্ডপ স্থাপিত হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা গতবারের চেয়ে বেশ কয়েকটি বেশি। সবগুলোর নিরাপত্তা দেওয়া হবে। বিশেষ করে ঢাকেশ্বরী, রামকৃষ্ণ মঠ, বনানী, কলাবাগান, রমনা, কালিবাড়ী সিদ্ধেশ্বরীসহ বড় বড় পূজা মণ্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’

‘আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও সিসি টিভি ব্যবহার করা হবে। পুলিশ যেগুলো পারবে দেবে, সবগুলো দেওয়া সম্ভব নয়। পূজা উদযাপন কমিটিকে প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপনের অনুরোধ করেছি। তারা সাধ্যমত ব্যবস্থা নেবে। আর্চওয়ে না হলে প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে মেটাল ডিটেক্টর রাখার অনুরোধ করেছি।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের উদ্যোগে একটি পুলিশ কন্ট্রোল রুম করা হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেটা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে স্থাপিত হবে। সেটার মধ্যেমে ঢাকার পূজা মণ্ডপগুলোর কোনটার কি অবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যাবে এবং পুলিশ সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে। সারাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আইজিপির তত্ত্বাবধানে আরেকটি কন্ট্রোল রুম করা হবে। গতবারের মতো এবারও প্রতি মণ্ডপে সব ধর্ম ও শ্রেণির মানুষ নিয়ে একটা শৃঙ্খলা কমিটি করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইভটিজিং প্রতিরোধ ও মহিলাদের পূজা মণ্ডপে আগমনের স্বার্থে ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পোশাক ও আর্মব্যান্ড পরা মহিলা ভলান্টিয়ার রাখার জন্য আমরা পূজা উদযাপন কমিটিকে অনুরোধ করেছি। তারা একমত হয়েছেন।’

পূজায় আতশবাজি, মাদকদ্রব্য নিষেধ
মন্ত্রী বলেন, ‘পূজা চলাকালীন আমরা রাস্তায় মেলা বসাতে মানা করেছি। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, এতে রাস্তাঘাটে যানজট হয়, ছিনতাই ও নানান ধরনের বাধার সম্মুখীন হই। আমাদের একটা প্র্যাকটিস হয়ে গেছে, যারা পূজা করেন তারা আজানের সময় তা বন্ধ রাখেন। এবারও আমরা অনুরোধ করেছি, আজানের সময় যাতে পূজা মণ্ডপ থেকে কোনো ধরনের বাদ্য বা উচ্চস্বরে কিছু করা না হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পূজার সময় আতশবাজি একদম বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছি। আতশবাজির কারণে একটা বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কোথায় কি হচ্ছে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তা নজরে আনতে পারে না।’

পূজা মণ্ডপে মাদক সেবনে নিষেধ করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরও এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে।’

দায়িত্ব পালন করবেন ১ লাখ ৬৮ হাজার আনসার
মন্ত্রী বলেন, ‘এবার পুলিশের পাশাপাশি সারাদেশে এক লাখ ৬৮ হাজার আনসার নিরাপত্তার জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। বড় বড় মণ্ডপের পাশে ফায়ার সার্ভিস অবস্থান করবে এবং সবসময় সতর্ক থাকবে। বিসর্জনের সময় কোস্টগার্ডের ডুবুরিরা থাকবেন। যেখানে বিসর্জন হবে পুলিশের পাশাপাশি আমাদের নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশুরা শুরুর দিন হচ্ছে বিসর্জনের দিন। এজন্য পূজা উদযাপনকারী নেতা ও শিয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে আরেকটি মিটিং হবে। কথন কোথায় কার কি করতে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। যাতে সবাই সুন্দরভাবে পূজা ও আশুরা উদযাপন করতে পারেন।’

এছাড়া পূজার সময় রাস্তার বাতি সচল, অচল রাস্তাঘাট তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত ও পূজা মণ্ডপের কাছের ডাস্টবিনগুলো পরিষ্কার রাখতে সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সভায় জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যা ব, ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং হিন্দু সম্প্রদায় ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/এসআর/এমএস/আইআই

আরও পড়ুন