ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কালশীতে আগুন : এক বছরেও কারণ অজানা!

প্রকাশিত: ০৯:৩১ এএম, ১৩ জুন ২০১৫

রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে বিহারি ক্যাম্পের সংঘর্ষে দশজন প্রাণ হারালেও নেপথ্যের কারণ এখনো রয়ে গেছে ‘অজানা’। এ ঘটনায় পুলিশ ও বিহারিদের পক্ষ থেকে ছয়টি মামলা করা হলেও তদন্তের ‘অগ্রগতি নেই’ একটিরও। ২০১৪ সালের ১৪ জুন পবিত্র শবে বরাতে ‘আতশবাজি’পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিরাগত, বিহারি ক্যাম্পবাসী ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সেদিন দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মারা যান বিহারি ক্যাম্পের একই পরিবারের সাতজনসহ মোট নয়জন। এ ছাড়া পুলিশের গুলিতে মারা যান আজাদ (৩৫) নামে এক ব্যক্তি। তবে ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এই ঘটনার পেছনের নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো বের করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সংস্থা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংঘর্ষের ভিডিও প্রকাশিত হলেও শনাক্ত কিংবা গ্রেফতার হয়নি কেউই।

তদন্তে ধীরগতির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, সংঘর্ষের সময় শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। এতো লোকের ভেতরে কারা আগুন দিয়েছিল তাদের শনাক্ত করতে সময় লাগছে, তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

এ ঘটনায় পল্লবী থানায় পুলিশ বাদি হয়ে দু`টি ও কালশীর বিহারিরা চারটি মামলা দায়ের করে। পুলিশের মামলায় মসজিদে ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধাদান, আহত করা, হত্যার চেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়। এতে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ শতাধিক বিহারিকে আসামি করা হয়েছিল।

তবে আগুনে পোড়ানো এবং সংঘর্ষের ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলে দাবি করেন নিহত আজাদের ভগ্নিপতি মো. সুমন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিহারি ক্যাম্প থেকে কাছের বস্তিতে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া ও তাদের উচ্ছেদ করার পরিকল্পনায় মিরপুর-১১ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার সমর্থকেরা এ হামলা চালিয়েছিল। এতে এলাকার কয়েকজন যুবলীগ নেতা-কর্মীও জড়িত ছিলেন।

তদন্ত নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন মামলাগুলোর তদারকারী কর্মকর্তা ও ডিবির পশ্চিম জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, নয়জনকে আগুনে পুড়িয়ে মারার তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। তদন্ত রিপোর্টটি এখনো প্রস্তুত হয়নি। কাউকে গ্রেফতার বা শনাক্ত করা যায়নি এখনো। তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

অগ্রগতি নেই দায়ের করা বাকি পাঁচ মামলার তদন্তেও, বললেন এই কর্মকর্তা। তবে তিনি এও বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা, অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই এই মামলার তদন্ত চলছে।

তবে তদন্তের ধীরগতির কারণ হিসেবে নিহত আজাদের ভগ্নিপতি সুমন বলেন, আজাদের মৃত্যু পুলিশের গুলিতে হয়েছিল। পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশ কখনো তদন্ত করতে পারবে না। তাই তদন্তে এই ধীরগতি।

এসবের পরেও ভালো নেই কালশীর বিহারি ক্যাম্পবাসীরা। এ বছরের শব-ই-বরাতের রাতেও তাদের চলাচল সংরক্ষিত করে পল্লবী থানা পুলিশ। মসজিদ ও সড়কগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছিল অতিরিক্ত পুলিশ।

ক্যাম্পবাসীদের অভিযোগ, নিহতদের এক বছর স্মরণে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা দেয় পুলিশ। স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারেন না তারা। তবে পল্লবী থানা পুলিশের বক্তব্য, ক্যাম্পবাসীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এআর/বিএ/আরআই/এসআরজে