সড়কে ৮ মাসে ঝরেছে ২৮৭৩ প্রাণ
সড়কে থামছে না দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। সারাদেশে গত আট মাসে ২ হাজার ৪১৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ২ হাজার ৮৭৩ জন নিহত এবং ৬ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩৪৪জন নারী এবং ৩৮১ শিশু রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ২২টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এই তথ্য জানানো হয়।
পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা বেশি ঘটেছে। তবে জুন মাস থেকে তা পর্যায়ক্রমে কমেছে। ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৭২টি দুর্ঘটনা হয়। এতে ৫৬ নারী ও ৫৮ শিশুসহ মোট ৪৭২ জনের প্রাণহানি হয়। আর আগস্টে হয়েছে সর্বনিম্ন তথা ২১৭টি দুর্ঘটনা। এতে ২৫ নারী ও ৩১ শিশুসহ মোট ২৭৯ জন নিহত হয়েছে।
অপরদিকে জানুয়ারিতে ১ হাজার ৯৪ জন আহত হলেও আগস্টে এই সংখ্যা নেমে ৫০৩- এ দাঁড়িয়েছে।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি এবং আহতের সংখ্যা গত তিন মাসে ধীরে ধীরে কমলেও তা এখনও সহনীয় মাত্রায় নেমে আসেনি। তবে এই ধারা অব্যাহত থাকলে জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০২১ সালের মধ্যে অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে জাতীয় কমিটি মনে করে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্য ছয় মাসের মধ্যে জানুয়ারিতে ৩৫০টি দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৫৫ শিশুসহ ৪১৬ জন নিহত এবং ১ হাজার ১২ জন আহত হয়েছে। মার্চে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৩০টি। এতে নিহত ও আহত হয়েছে যথাক্রমে ৩৬২ ও ৮৬৫ জন। নিহতদের মধ্যে ৪৯ নারী এবং ৫৪ শিশু রয়েছে। এপ্রিলে ৩২০টি দুর্ঘটনায় ৪৭ নারী আর ৪৮ শিশুসহ ৩৪৯ জন নিহত এবং ৮৬১জন আহত হয়েছে। মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৪৬টি। এতে ৫২ নারী ও ৫৮ শিশুসহ ৪১০ জনের প্রাণহানি ঘটে। আর আহত হয় ১ হাজার ১৬ জন। জুনে ২৬৫টি দুর্ঘটনায় ৩৪ নারী ও ৪২ শিশুসহ ৩৩৩জন নিহত এবং ৬৩২ জন আহত হয়। জুলাইয়ে ২১৯টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত ও আহত হয়েছে যথাক্রমে ২৭৯ ও ৫১৭জন। নিহতদের মধ্যে ২৭জন নারী ও ৩৫টি শিশু রয়েছে।
জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত সাতটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- ১. বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, ২. ওভারলোডিং ও ওভারটেকিংকালে নিয়ম ভঙ্গ, ৩. দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, ৪. ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, ৫. ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও সড়কের বেহাল দশা, ৬. ক্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব এবং ৭. অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ।
এফএইচ/জেডএ/এমএস